অজস্র ধারায় আত্মপ্রকাশ করিয়াছে। কবীর, দাদা, নানক, সরদাস, মীরা ও তুলসীদাস প্রভৃতির অমর রচনাবলীর মধ্যে কতই না মহামল্য সম্পদ পরিব্যাপ্ত হইয়া আছে। বিভিন্ন ভাষাভাষী হইলেও, আচার-ব্যবহার, রীতিনীতির মধ্যে পার্থক্য থাকিলেও আধ্যাত্মিক ও চিন্তার রাজ্যে যে এই বিরাট দেশের মনীষীরা এক অখন্ড একাত্মতার সাের জাগাইয়া তুলিয়াছেন, তাহাতে সন্দেহ করিবার অবকাশ নাই। ভারতের প্রধান লক্ষ্য বিভিন্নতার মধ্যে ঐক্য স্থাপনা। সাহিত্যের মাধ্যমে এই লক্ষ্যের ফলগ প্রবাহ চিরদিন ভারতের প্রদেশে প্রদেশে চলিয়া আসিয়াছে। ইহা সমরণ রাখিয়া ভারতের প্রত্যেক প্রদেশের ভাষাই যাহাতে সমদ্ধ হইয়া উঠে, সেইদিকে লক্ষ্য রাখিয়া আজি আন্তঃপ্রাদেশিক ভাববিনিময়ের ব্যবস্থার আবশ্যকতা দেখা দিয়াছে। প্রাদেশিক সাহিত্যগলি পঠন-পাঠনের দ্বারা এই কাজ সম্মঠভাবে হইতে পারে। তাই আজি প্রয়োজন ভারতীয় সাহিত্যের মধ্যে যেগলি সমধিক ঐশ্বযশালী তাহারা যাহাতে আপন আপন ক্ষেত্রে উন্নত হইয়া উঠে, গৌরবময় হইয়া উঠে, নব নব ভাবধারায় পরিপন্ট হইয়া উঠে, সেদিকে আমাদের দন্টি দেওয়া। এক ভাষাকে দাবাইয়া রাখিয়া অন্য ভাষার প্রসার ও প্রভাব বিস্তাতির চেটা উচিত নহে, সমর্থনযোগ্যও নয়। ভাষা লইয়া যদি পরস্পরের মধ্যে কলহ বধিয়া উঠে, তাহার অপেক্ষা মমান্তিক দর্ঘটনা আর কিছই থাকিতে পারে না। স্বাধীনদেশের একটা রাস্ট্রভাষা থাকা প্রয়োজন। ইংরাজ এদেশ হইতে চলিয়া যাইবার পর রাস্ট্রভাষার পে। হিন্দী ভাষাকে মযাদা দেওয়া হইয়াছে। একথা অস্বীকার করিয়া লাভ নাই যে, ভারতের অধিকাংশ প্রদেশেই হিন্দীভাষা প্রচলিত এবং জনসাধারণের মধ্যেও হিন্দীভাষা অপেক্ষাকৃত সহজবোধ্য। অনেকের ধারণা, হিন্দীভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করিবার কথা কংগ্রেসমহল হইতেই প্রথম উঠিয়াছিল। কিন্তু, সে ধারণা ঠিক নহে। অনেকেই হয়ত জানেন না, বাঙ্গালীর সাহিত্যগর, বঙ্কিমচন্দ্ৰই বহনকাল পাবে, বােধহয় সর্বপ্রথম, বলিয়াছিলেন—“হিন্দীভাষার সাহায্যে ভারতবষের বিভিন্ন প্রদেশের মধ্যে যাঁহারা ঐক্যবন্ধন স্থাপন যোগ্য।” বঙ্কিমের এই উক্তির সদশে অভিমত বত্তিকমের অন্যতম (t)
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৬৫
অবয়ব