অখন্ড যোগ রহিয়াছে। বাঙলা ভাষা হিন্দৰ-মাসলমান উভয় ধর্মাবলম্বীর দ্বারা পরিপন্ট হইয়াছে। বহ মসলমান কবি ও সাহিত্যিক বাঙলা ভাষাকে শ্ৰীসম্পন্ন করিয়াছেন। রাজনৈতিক ভুল-ভ্রান্তিতে পােব বাঙলা পশ্চিম বাঙলা হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া গেলেও সেখানকার মসলমান অধিবাসীরা তাহদের প্রাণের ভাষা। এই বাঙলা ভাষাকে অাঁকড়াইয়া ধরিয়া রাখিয়াছে। তাহার অমযাদা হইতে দিতে তাহারা নারাজ। ভাষা লইয়া আন্দোলন সেখানে ইতিমধ্যেই দেখা দিয়াছে। তাহদের মাতৃভাষা বাঙলা ভাষাকে ফেলিয়া উদ শিক্ষা করিবার জন্য তাহারা প্রস্তুত নয়। জোর করিয়া উদভাষাকে প্রচলিত করিবার অপচেষটা সেখানে আজ পদে পদে বাধা পাইতেছে। বাঙলার সহিত উদশব্দ মিশাইয়া এক কৃত্রিম ভাষাসন্টির চেস্টাও চলিয়াছে। আমার দািঢ় বিশ্বাস, এই সকল চেন্টা ব্যর্থই হইবে। কে জানে এই ভাষার বেদীমলেই হয়ত কৃত্রিম ভেদরেখার অস্তিত্ব বিলোপ পাইবে, আবার নাতন করিয়া এক সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে, সাহিত্যের উদার ছত্ৰতলে উভয় বঙ্গের মিলন সাধিত হইবে। শান্ত, সংযতচিত্তে আমাদের সেই শভেদিনের প্রতীক্ষা করিতে হইবে। আজ এই সভাক্ষেত্র হইতে সমস্ত বাঙালীজাতিকে—যে যেখানেই থাকুন না কেন —আমাদের আন্তরিক শােভ কামনা জ্ঞাপন করি। অনেকই বলিতেছেন—বাঙালী আজ পিছাইয়া পড়িতেছে। বাঙালীর সেই তেজ ও সজীবতা নাই, সেই উদ্যম ও উৎসাহ নাই। এই অভিযোগ যে অসত্য, এমন কথা অবশ্য বলিতে পারি না। ইংরাজ শাসনের আমলে শািন্ধ বাঙালী নহে—ভারতের অন্যান্য প্রদেশবাসীও পাশ্চাত্ত্য শিক্ষা ও সভ্যতার সংস্পশোঁ আসিয়াছিল। কিন্তু, সে সংসােপশের ফলে বাঙলায় যেমন মনীষা ও প্রতিভার দীপ্তি দেখা দিয়াছিল, তেমনটি আর কোথাও দেখা যায় না। ধমনীতি, সমাজনীতি, রাজনীতি ও সাহিত্যনীতি প্রভৃতি সকল ক্ষেত্রেই বাঙালী ছিল তখন অগ্রণী—সকল বিষয়েই ভারতবাসীর পথপ্রদর্শক। রামমোহন, রামগোপাল, বিদ্যাসাগর, মধ্যসদন, রাজেন্দ্রলাল, বঙ্কিমচন্দ্র, গিরিশচন্দ্ৰ, কেশবচন্দ্র, সরেন্দ্রনাথ প্রভৃতি দিকপাল এই কথারই জাতজবল্যমান প্রমাণ। ইহার পর বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, আশতোষ, অরবিন্দ, প্ৰফল্লচন্দ্র, জগদীশচন্দ্র, চিত্তরঞ্জন ও সভাষচন্দ্র প্রভৃতি দিগিবজয়ী \ტ \Sტ
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৬৯
অবয়ব