অভিনেতা প্রতাপচন্দ্ৰ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বসগণ, প্রতি শনিবারে যে অভিনয় হইত। তাহার সকল ব্যয় এবং ছয় বৎসর ধরিয়া প্রতি সপ্তাহে বিশেষ বিশেষ অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য যে ব্যয় হইত, তাহা বহন করিতেন। ইহার পরে অর্থের অভাবে এখানকার অভিনয় বন্ধ হইয়া যায়। এই বহাবাজার থিয়েটারে মনোমোহন বসর “রামের রােজ্যাভিষেক”, “সতী” এবং “হরিশচন্দ্র” অভিনীত হয়। সংগীত, দশ্যপটাদি, বাচনভঙ্গী, ঐকতান এবং সাধারণ পরিচালনা বিষয়ে অভিনয় এত সসংগত হইত যে, তাহার খ্যাতি সহরের সবত্র ছড়াইয়া পড়িয়াছিল এবং ভারতীয় ও ইউরোপীয় সকল দশকই একবাক্যে উহার প্রশংসা করিয়াছিলেন। ১৮৩১ সালের প্রথম বাঙলা নাটকের অভিনয়কাল হইতে এ পযন্ত আমরা যত নাটক অভিনীত হইবার সংবাদ পাইয়াছি, তাহার সংখ্যা ও মাল্য কম নয়। এ কথা স্বীকার করিতে হইবে যে, বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিরা যে অভিনয়ের আয়োজন করিয়াছিলেন, তাঁহাদিগের কৃতিত্ব সািবলাপ নয়; কিন্তু তাঁহারা যে জনসাধারণের আমোদ-প্রমোদের জন্য উৎসক ছিলেন, সে-কথা বলা যায় না। যদিও এমন এক সময় ছিল, যখন ঠাকুর পরিবারের মধ্যে নিজেদের অভিনয়কে ক্রমশঃ জনপ্রিয় করিবার জন্য বিনামল্যে টিকিট বিতরণ করিবার ইচ্ছা জাগিয়াছিল। কিন্তু মনে রাখিতে হইবে, যাহারা ধনী এবং পদস্থ ব্যক্তি তাঁহাদিগকেই সাধারণতঃ বিনামল্যের টিকিটে আমন্ত্রণ জানানো হইত। যাহা হৌক, বিনামল্যের টিকিট সাধারণ লোকের জন্য ছিল না এবং তাহারা নাট্যশিলে,পর প্রতি যতই অনােরাগী হৌক না কেন, তাহাদিগকে নিরাশ হইতে হইত। কিন্তু এখান হইতেই একদল তরণ উদ্যোক্তার মনে এই চিন্তা জাগিল যে, জনসাধারণের আনন্দের জন্য একটি রঙ্গালয়ের প্রতিস্ঠা করিতে হইবে। ঠাকুর-পরিবারের অভিনয় উপলক্ষে বিনামল্যের টিকিট সংগ্রহের যে বাধা এবং প্রবেশের যে কঠিন নিয়ম ছিল, তাহা দেখিয়া একজন দশকের মনে হইয়াছিল যে, ঠাকুর-পরিবারের এই রক্ষণশীল নিয়মের বিরদ্ধে একটা ব্যবস্থা করিতে হইবে এবং পদমযাদা এবং জাতিবর্ণের ভেদাভেদের দিকে না তাকাইয়া নাট্যাভিনয়কে সকলের পক্ষে সহজ করিতে হইবে। এই দশকটি আর কেহ নন, তিনি হইতেছেন। তরণ গিরিশচন্দ্র ঘোষ। ধনীর সাহায্য ব্যতীত কোন পরিকলপনা করিতে গেলে, খরচের ህዖ O
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৮৬
অবয়ব