পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১২ ঐকান্ত প্রাণপুরুষ ও মানুষের চোখে নিবিড় অর্ণধার । কিন্তু সে কি রূপের অভাবে ? যাহাকে বুঝি না, জানি না, যাহার অন্তরে প্রবেশের পথ দেখি ন—তাহাই ত • অন্ধকার ; মৃত্যু তাই মানুষের চোখে এত কালে, তাই তার পরলোকের পথ এমন দুস্তর অ*াধারে মগ্ন ! তাই রাধার দুইচক্ষু ভরিয়া যে রূপ প্রেমের বন্যায় জগৎ ভাসাইয়। দিল, তাহাও ঘনশ্যাম ! কখনও এ সকল কথা ভাবি নাই, কোন দিন এ পথে চলি নাই ; তবুও কেমন করিয়া জানি না, এই ভয়াকীর্ণ মহাশ্মশান-প্রান্তে বসিয়া নিজের এই নিরুপায় নিঃসঙ্গ একাকিস্ককে অতিক্রম করিয়া আজ হৃদয় ভরিয়৷ একট। অকারণ রূপের আনন্দ খেলিয়া বেড়াইতে লাগিল ; এবং অত্যন্ত অকস্মাৎ মনে হইল, কালোর যে এত রূপ ছিল, সে ত কোন দিন জানি নাই। তবে হয় ত মৃত্যুও কালে বলিয়া কুৎসিত নয় ; একদিন যখন সে আমাকে দেখা দিতে আসিবে, তখন হয় ত তার এমনি অফুরন্ত, সুন্দর রূপে আমার দুইচক্ষু জুড়াইয়। যাইবে । আর সে দেখার দিন যদি আজই আসিয়া থাকে, তবে হে আমার কালে ! হে আমার অভাগ্র, পদধ্বনি ! হে আমার সর্ব-দুঃখভয়-ব্যাথাহারী অনন্ত সুন্দর । তুমি তোমার অনাদি অাধারে সর্বাঙ্গ ভরিয়া আমার এই দুটি চোখের দৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ হও, আমি তোমার এই অন্ধতমসাবৃত নির্জন মৃত্যুমন্দিরের দ্বারে তোমাকে নিৰ্ভয়ে বরণ করিয়া মহানন্দে তোমার অনুসরণ করি । সহসী মনে হইল, তাই ত ! তাহার ওই নির্ববাক আহবান উপেক্ষা করিয়া অত্যন্ত হীন অন্তবাসীর মত এই বাহিরে বসিয়া আছি কি জন্য ? একেবারে ভিতরে, মাঝখানে গিয়া বসি না কেন ।