পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রীকান্ত 'qe ঢাল-বিছানার উপর রেড়ির তেলের সেজ জ্বালাইয়া বই খুলিয়৷ বসিয়া গিয়াছি । বাহিরের বারান্দায় একদিকে পিসেমশায় ক্যাম্বিশের খাটের উপর শুইয়া তাহার সান্ধাতন্দ্রাটুকু উপভোগ করিতেছেন, এবং অন্যদিকে বসিয়৷ বৃদ্ধ রামকমল ভট্চায আফিং খাইয়া, অন্ধকারে চোখ বুজিয়া, থেলে হুকায় ধূমপান করিতেছেন। দেউড়তে হিন্দুস্থানী-পেয়াদাদের তুলসীদাসী স্থর শুনা যাইতেছে, এবং ভিতরে আমরা তিন ভাই, মেজদার কঠোর তত্ত্বাবধানে নিঃশব্দে বিদ্যাভ্যাস করিতেছি । ছোড়দা, যতীনদী ও আমি তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি, এবং গম্ভীর-প্রকৃতি মেজদা বারদুই এণ্টান্স ফেল করিবার পর গভীর মনোযোগের সহিত তৃতীয়বারের জন্য প্রস্তুত হইতেছেন । তাহার প্রচণ্ড শাসনে একমুহূৰ্ত্ত কাহারে সময় নষ্ট করিবার জে ছিল না। আমাদের পড়ার সময় ছিল সাড়ে সাত হইতে নয়ট । এই সময়টুকুর মধ্যে কথাবাৰ্ত্ত কহিয়া মেজদার ‘পাশের পড়ার বিঘ্ন না করি, এই জন্য তিনি নিজে প্রত্যহ পড়িতে বসিয়াই কঁচি দিয়া কাগজ কাটিয়} বিশ-ত্রিশ খানি টিকিটের মত করিতেন । তাহার কোনটাতে লেখা থাকিত ‘বাইরে’, কোনটাতে থুথুফেল’, কোনটাতে 'নাক-ঝাড়, কোনটাতে তেষ্ট পাওয়া’ ইত্যাদি ৷ যতীনদ একট। 'নাকঝাড়া টিকিট লইয়া মেজদার সুমুখে ধরিয়া দিলেন । মেজদ। তাহাতে স্বাক্ষর করিয়া লিখিয় দিলেন—হু —আটটা তেত্রিশ মিনিট হইতে আটট। সাড়ে চৌত্ৰিশ মিনিট পৰ্য্যন্ত, অর্থাৎ এই সময়টুকুর জন্য সে নাক ঝাড়িতে যাইতে পারে । ছুটি পাইয়া যতীনদা টিকিট হাতে উঠিয়া যাইতেই ছোড়দা খুধুফেলা টিকিট