পাতা:শ্রীগৌর-উপদেশামৃত (প্রথম খণ্ড) -মধুসূদন দাস অধিকারী.pdf/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীগৌর উপদেশামুত । bሃ ዓ স্ফীত হইয়া ব্রাহ্মণের অবমাননা করেন। কিন্তু শেষে অগস্ত্য মুনির শাপে সৰ্পযোনি লাভ করিলেন। পৃথুরাজের পিতা বেণও ব্ৰাহ্মণের অবমাননা করিয়া প্ৰাণ হারাইয়াছেন। নরক রাজা, – যাহার উপদ্রবে। জগদ্বাসী ত্ৰস্ত হইয়া উঠিয়াছিল, তিনিও শ্ৰীকৃষ্ণের হস্তে নিহত হইলেন। অতএব এরূপ মহা দিগ্বিজয়ী যে যে ব্যক্তির কথা শুনিয়াছ, বুঝিয়া দেখ, কাহার গৰ্ব্ব না চুৰ্ণ হইয়াছে ? আবার বড় বড় সাধুদের মধ্যেও যখনই কোন বিষয়ের অহঙ্কার প্রবেশ করিয়াছে, শ্ৰীভগবান তখনই তঁহাদের প্রাণে কঁাটা ফুটাইয়াছেন। ধৰ্ম্মপ্ৰাণ মহারাজ হরিশ্চন্দ্ৰ সামান্য অহঙ্কারের জন্য স্বৰ্গে যাইতে পারিলেন না । ফলতঃ শ্ৰীভগবানের রাজ্যে অহঙ্কারে উৰ্দ্ধশির হইয়া কেহ অধিক দিন বিচরণ করিতে পারেন না । ভগবানের তাহা অসহ্য । দেখিবে, সে দিগ্বিজয়ীর যত বিদ্যার “বড়াই” এইখানেই বিনষ্ট হইবে। যে ব্যক্তি প্ৰকৃত গুণী, সে তাহার স্বভাব সুলভ গুণে সৰ্ব্বক্ষণই ফলবান বৃক্ষের ন্যায় বিনম্রভাবে অবস্থান করেন, কখন আটোপ-টঙ্কারে অহঙ্কার প্রকাশ করেন না । এই বলিয়া প্ৰভু সহাস্য-বদনে শিষ্যবৰ্গ সঙ্গে সুরধুনী-তীরে গিয়া উপবেশন করিলেন । জ্যোৎস্নাময়ী রজনী। নিৰ্ম্মল সুধাকারের ঢল ঢল রাজত-কিরণে ধারণীবক্ষ উদ্ভাসিত হইয়াছে। পবিত্ৰ-তোয় জাহাবীর মৃদু। তরঙ্গগুলি সেই স্নিগ্ধ জ্যোৎস্না মাখিয়া উল্লাসে নৃত্য করিতেছে । মৃদুমধুর সান্ধ্য-সামীর সেই আনন্দ লহরোখিত শীকরবিন্দু বহন করিয়া ধীরে ধীরে বহিতেছে, তাহার স্নিগ্ধপরশে তাঁটচারী জীবকুলের প্রাণ মন পবিত্রতার-ভাবে পুলকিত হইয়া উঠিতেছে। সেই পূৰ্ণচন্দ্ৰবতী রজনীতে-সেই পবিত্ৰ জ্বাকুবী পুলিনে বসিয়া শ্ৰীশচীনন্দন ভাবিতে লাগিলেন - “দিগ্বিজয়ী জিনিবাঙ কেমন প্রকারে । এ বিপ্ৰেরি হইয়াছে মহা অহঙ্কার । জগতে মোহর প্রতিদ্বন্দ্বী নাহি আর ৷ সভা মধ্যে জয় যদি করিয়ে ইহারে । মৃত্যুতুল্য হইবেক সংসার ভিতরে। লাঘবো বিপ্রেরো করিবেক সর্ববলোকে । লুঠিবেক সৰ্বস্ব, মরিলে বিপ্ৰ শোকে ॥