পাতা:শ্রীশ্রীচৈতন্যমঙ্গল.djvu/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ه / ] ভক্তিপথের পথিক হইয়া ঐগুলি গ্রহণ করিতে আমাদের সাহস হয় না | র্যাঙ্গরা ভক্তির স্বরূপ কিঞ্চিম্মাত্র ও উপলব্ধি করিয়াছেন, তাহার। ভক্তিপথ হইতে বিচ্যত হন না বলিয়া তাহাদের লেখণীতে চপোক-মত, বৌদ্ধ বিশ্বাস ও জড়বাদপ্রাধান্ত স্থান পায় না। শ্ৰীলোচনদাস ঠাকুরের শ্রীচৈতন্যমঙ্গলের ভাষা-ললিতা, শ্ৰীগৌরের প্রতি হাদী প্রতি দর্শন করিয়া যদিও কেহ কেহ তাহাকে শুদ্ধভক্তি-তত্ত্ব হইতে কিঞ্চিৎ অন্যত্র যাইবার প্রয়াসী বলিয়া থাকেন, আমরা সেরূপ বলিতে প্রস্তুত নহি ; কেন না, “বৈষ্ণবের ক্রিয়া-মুদ্র বিজ্ঞে না বুঝয় ।” গেীরনগৰীপাদের দুর্গন্ধ শ্রীচৈতন্যমঙ্গলে আরোপিত করিবার ঘুণিত-বাসনা যেন কোনদিনই আমাদের হৃদেশ অধিকার না করে । আমরা শ্রীচৈতন্তের কৃপা-প্রার্থ হইয়া নানাবিধ অনর্থপূর্ণবিচার ইষ্টতে পরিত্রাণ লাভ করিয়া মঙ্গললাভ করিব—ইহাই পাঠক-সুত্রে আমাদের একমাত্র অশা । আমরা ও আশা দয়া করিয়া দশ-প্রকার বা ত্রয়োদশ-প্রকার অপসম্প্রদায়—যাহারা আপনাদিগকে গৌড়ীয় বলিয়া অভিমান করিবার জন্য অগ্রসর হন এবং প্রকৃত গৌড়ীয়দের চরণে অপরাধী হন,—র্তাহাদের সহিত যেন এক-মত স্থাপন না করেন । শ্ৰীেচৈণ্ডস্তমঙ্গলের আকর—শ্ৰীমুরারিগুপ্তের ক্রীচৈতন্তಕ್ವತ ! লেখক স্বত্রপণ্ডে লিখিয়াছেন,— “জন্ম হইতে বালক-চরিত্র যেবা কৈল । আদ্যোপান্ত যেইরূপে প্রেম প্রচারিল ॥ দামোদর-পণ্ডিত সৰ্ব্ব পুছিলা তাহারে । অদ্যোপাস্ত যত কথা কহিলা প্রকারে ॥ শ্লোকবন্ধে হৈল পুথি ‘গৌরাঙ্গ-চরিত’ । দামোদর-সংবাদ—মুরারি-মুপোদিত ॥ শুনিয়া আমার মনে বাড়িল পিরীত । পচালি-প্রবন্ধে কহো গৌরাঙ্গ-চরিত ॥” এই গ্রন্থের লেখক—শ্ৰীগৌরপার্ষদ শ্ৰীল নরহরিদাসের শিষ্য এবং রাঢ়ীয়-বৈদ্যঝুলে বৰ্দ্ধমান জেলায় কাটোয়া-মহকুমার অন্তর্গত কোগ্রামে উদ্ভূত হইয়াছিলেন । গ্রন্থের ব্যস্থানে ঠাকুর লোচনদাস শ্ৰীল নরহরি সরকার-ঠাকুর মহাশয়ের অনুগ বলিয়া আত্মপরিচয় দিয়াছেন । শ্রীচৈতন্যমঙ্গল—পাচালি-জাতীয় গ্রন্থ অর্থাৎ পাচপ্রকার গীতিচ্ছন্দে রচিত সাহিত্য । গ্রন্থের ভাষায় প্রচুর ভাব ও অসামান্ত-লালিত্য পরিদৃষ্ট হয় । ‘লোচনের পাঁচালি’ বলিয়া যে সকল প্রাকৃত-গীতিসমূহের সম্বদ্ধ মালিকা অধুনাতন প্রচলিত হইয়াছে, তাহা বিশেষ সতর্কতাব সহিত পর্শ্ব-কল। কর্তব্য। তাহার অনেক-স্থলে আধুনিক গেীরনগরী-বাদের দুৰ্গন্ধ স্থাপিত হইয়াছে । শ্রীচৈতন্যমঙ্গলের ঐতিহাসম্বন্ধিনী উক্তি অনেকে গ্রহণ করিতে ইতস্তত বোধ বরেন,—কতকাংশ স্বল্পমূলে সংগৃহীত। সকল ক্ষেত্রে শুদ্ধভক্তি-তত্ত্বের সম্পূর্ণ আদর দেখা যায় না । কিম্বদন্তী এক্ট যে, শ্ৰীল লোচনদসঠাকুরের গ্রন্থটী— ঠাকুর ঐল বৃন্দাবনদাসের শ্রীচৈতন্তভাগবতের কিছু পূৰ্ব্বে রচিত। ঐল বৃন্দাবনের জননী গ্রন্থ পূৰ্ব্বে রচিত হইবার কথা বলায়, শ্ৰীবৃন্দাবনদাস ঠাকুরের গ্রন্থখানির নাম পরিবর্তিত হইবার প্রয়োজন হইয়াছিল। শ্রীচৈতন্তমঙ্গলের ভৌগোলিক নিদর্শনগুলিব প্রামাণিকতা-সম্বন্ধে কেহই সন্দেহ স্থাপন বরিতে পারেন না। ঐগেীরসুন্দরের বাল্যলীলা—যাহা শ্ৰীমুরারি গুপ্তবেঝ ক্রীচৈতন্ত-চরিতে লিপিবদ্ধ কবিয়াছেন, ঐ গুলিকে আকরগ্রমাণরূপে গ্রহণ করিয়া ঐচৈতন্যমঙ্গলের রচনা অরন্ধ হইয়াছে । এই গ্রন্থে শ্রীচৈতন্যদেবের বৈরাগ্যাদশের সুষ্ঠবর্ণন—পাঠকের প্রীতি-প্রদ, বিশেষতঃ শ্ৰীলোচন-ঠাকুরের শ্ৰীগৌর-প্রীতি গেীরভক্তগণের প্রতি আকর্ষণ করিবে— ইহাতে আর সন্দেহ নাই। গুণরাজ খানের প্রাচীন পাঁচালিসাহিত্য এই গ্রন্থের বহুপূৰ্ব্বে রচিত হইয়াছিল । শ্রীচৈতন্তমঙ্গলের গীতিসমূহ অদ্যাবধি রাঢ়-দেশের নানা-স্থানে ঝুমুর বা রামায়ণ-গানের দ্যায় গীত হইয়া থাকে। শ্ৰীল কবিরাজ গোস্বামীর প্রেমভক্তি-বর্ণন-মুলে শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতের কাব্য, শ্ৰীলোচনদাসঠাকুরের কমনীয় সাহিত্য ও প্রবৃন্দাবন সঠাকুরের শুদ্ধভক্তি-মুলে পরমেীদাৰ্য্যময় ভাষা-ললিত্য চি--- দিনই ঐগেীরভক্তগণের আনন্দ বর্ধন করিয়াছে। _