পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অস্টম খন্ড দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ প্রথম পরিচ্ছেদ দক্ষিণেশবরে দশহরাদিৰসে গহস্থাশ্রমকথা প্রসঙ্গে [রাখাল, অধর, মাল্টার, রাখালের বাপ, বাপের অবশ্যর প্রভূতি] আজ দশহরা, জ্যৈষ্ঠ শুক্লা দশমী, শুক্রবার ১৫ই জন, ১৮৮৩ । ভক্তেরা শ্রীরামকৃষ্ণকে দশন করিতে দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ীতে আসিয়াছেন। অধর, মান্টার দশহরা উপলক্ষ্যে ছয়টি পাইয়াছেন। রাখালের বাপ ও তাঁহার বাপের শ্বশর আসিয়াছেন। বাপ দ্বিতীয় সংসার করিয়াছিলেন। ঠাকুরের নাম বশর অনেকদিন হইতে শুনিয়াছেন। তিনি সাধক লোক, শ্রীরামকৃষ্ণকে দশন করিতে আসিয়াছেন। ঠাকুর আহারান্তে ছোট খাটটিতে বসিয়া আছেন। রাখালের বাপের শ্বশরকে এক একবার দেখিতেছেন। ভক্তেরা মেঝেতে বসিয়া আছেন। শবশরে—মহাশয়, গহপথাশ্রমে কি ভগবান লাভ হয় ? শ্রীরামকৃষ্ণ (সহস্যে)-কেন হবে না? পাঁকাল মাছের মত থাকো। সে পাঁকে থাকে কিন্তু গায়ে পাঁক নাই। --আর ঘসেকির মত থাকো। সে ঘরকন্নার সব কাজ করে, কিন্তু মন উপপতির উপর পড়ে থাকে। ঈশ্বরের উপর মন ফেলে রেখে সংসারের কাজ সব কর। কিন্তু বড় কঠিন। আমি ব্রহ্মজ্ঞানীদের বলেছিলাম, যে ঘরে আচার তেতুল আর জলের জালা সেই ঘরেই বিকারের রোগী! কেমন করে রোগ সারবে ? আচার তেতুল মনে করলে মখে জল সরে। পরেষের পক্ষে সন্ত্রীলোক আচার তেতুলের মত। আর বিষয়তৃষ্ণা সবাদাই লেগে আছে ; ঐটি জলের জালা। এ তৃষ্ণার শেষ নাই। বিকারের রোগী বলে, এক জালা জল খাব! বড় কঠিন। সংসারে নানা গোল। এদিকে যাবি, কেসিতা ফেলে মারবো ; ওদিকে যাবি, ঝাঁটা ফেলে মারবো ; এদিকে যাবি জতো ফেলে মারবো। আর নিজন না হলে ভগবান চিন্তা হয় না। সোনা গলিয়ে গয়না গোড়বে, তা যদি গলাবার সময় পাঁচবার ডাকে, তাহলে সোনা গলান কেমন করে হয় ? চাল কাঁড়ছো একলা বসে কাঁড়তে হয়। এক একবার চাল হাতে করে তুলে দেখতে হয়, কেমন সাফ হলো। কাঁড়তে কাঁড়তে যদি পাঁচবার ডাকবে, ভাল কাঁড়া কেমন করে হয় ?