পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২০ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড তদীয় গুণমুগ্ধ আসামের চিফ কমিশনার বাহাদুর ১৮৮২ খৃষ্টাব্দে তাহাকে দুখানা চিত্র উপহার দেন। ১৮৪৭ খৃষ্টাব্দ ৩রা জানুয়ারী তারিখে প্রকাশিত আসাম গেজেটের ১নং নোটিফিকেশনে তাহাকেও আদালতে উপস্থিত না হইবার ক্ষমতা দেওয়া হয়। ১৮৮৯ খৃষ্টাব্দ ২২শে আগষ্ট তাহার মৃত্যু হয়। তদুপলক্ষে শ্রীহট্টের প্রত্যেক আফিস আদালত এক দিনের জন্য বন্ধ হইয়াছিল। মজিদ বখৎ মজুমদার সাহেব তাঁহারই অনুজ। ১৮৭৮ খৃষ্টাব্দে তিনি রাজশাহীর ডিপুটী ম্যাজিষ্ট্রেট ও কালেক্টর নিযুক্ত হন ও তাহার পর একষ্ট্রা এসিষ্টেণ্ট কমিশনার রূপে আসাম প্রদেশে বদলী হইয়া আসেন। তিনি লুশাই যুদ্ধে ও বিগত মণিপুর যুদ্ধে গবর্ণমেণ্টকে নানারূপ সহায়তা করেন। লুশাই যুদ্ধে সাহায্য প্রদান জন্য তিনি গবর্ণমেণ্ট হইতে ধন্যবাদ সূচক চিঠি৯ প্রাপ্ত হন এবং মণিপুর রাজ্য বিজিত হইলে, যুদ্ধে সাহায্য জন্য পুরস্কার স্বরূপ মণিপুর রাজের হস্তীদন্ত-নিৰ্ম্মিত ছত্ৰদণ্ড ও সুবর্ণ-রঞ্জিত ছত্র প্রাপ্ত হন। মজিদবখৎ সাহেবকে গবর্ণমেণ্ট খান বাহাদুর উপাধি দান করেন, এই উপাধি দানোপলক্ষে তাহাকে সুবর্ণ হাতাযুক্ত মূল্যবান এক তরবারি প্রদত্ত হয়। তিনি ভারত-সম্রাট সপ্তম এডওয়ার্ড বাহাদুরের সম্রাট উপাধি গ্রহণোপলক্ষে দিল্লী দরবারে গমন ও তথায় একটি করনেশন পদক প্রাপ্ত হন। পূৰ্ব্বে তিনি সভ্রাতৃক মক্কাগমন কালে জাহাজে বিপদগ্রস্ত হইয়াছিলেন। ভগবৎ কৃপায় উদ্ধার পান, তৎকৃত Majumdar family পুস্তিকায় তাহা বিস্তারিত বর্ণিত আছে। এই বংশে আরও অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির উদ্ভব হয়, তন্মধ্যে আশ্রব আলী মজুমদারের নাম করা যাইতে পারে। ইনি অসাধারণ বলশালী ছিলেন। কুস্তিবিদ্যায় তাহার সমকক্ষ লোক দৃষ্ট হইত না। পরাক্রম দর্শনে লোকে বিস্মিত—চিত্তে ভাবিত যে মানুষে তদ্রুপ বল কোন রূপে কখন সম্ভবে না; তিনি নিশ্চিত দৈববল সম্পন্ন-– “পরীসাধনায় সিদ্ধ” আশ্রব আজীবন কুমার ব্রতাবলম্বী ছিলেন । মুফতি বংশ বুরহানউদ্দীন কেতান হজরত শাহজলাল মুজররদ সহ আরব হইতে যে দ্বাদশজন আউলিয়া আগমন করেন, তন্মধ্যে একজনের নাম খাজা বুরহানউদ্দীন কেতান । খাজা উপাধির ন্যায় কেতান (কত্তাল) একটা উপাধি । ফকিরী বা বৈরাগ্যে যাহাদের পারদর্শিতা লক্ষিত হইত, তাহারাই কেতান উপাধির অধিকারী হইতেন। বুরহানউদ্দীন, প্রথম খলিফা আবু বখারের বংশীয় ছিলেন বলিয়া কথিত আছে । ইহার পৌত্র ১০ শাহ জামালউদ্দীন আতুয়াজন পরগণায় গিয়া ধৰ্ম্ম প্রচার করেন, তথায় তাহার দরগা আছে; স্থানীয় যাত্রিবর্গ প্রায়শঃ সেই দরগা দর্শনে গমন করে । মওলানা জিয়াউদ্দীন তাহার পাচ পুত্রের মধ্যে জিয়াউদ্দীন বিশেষ বিদ্বান ও মওলানা উপাধিতে ভূষিত ছিলেন । তিনি দরগা মহল্লায় এক মাদ্রাসা স্থাপন করেন। ইংরেজ আমলে পারস্যের স্থলে বাঙ্গালা ভাষা আদালত-ব্যবহার্য্য ভাষার স্থান অধিকার না করা পর্যন্ত, সুদীর্ঘকাল এই মাদ্রাসা বিদ্যমান ছিল। এই মাদ্রাসা পারস্য ভাষা শিক্ষার এক প্রধান কেন্দ্র স্বরূপ ছিল। হিন্দু-মোসলমান সকলেই এই স্থানে পারস্য শিক্ষা করিত। জিয়াউদ্দীনের পুত্রও বিদ্যাৰ্জ্জনে বিশেষ মনোযোগী ছিলেন এবং 3. Letter No. 7743 Dated 22nd February, 1890, Vide letter No. 1829 p. [)ated 15th March. 189(). ১০. ছ পরিশিষ্টে মুফতির বংশ তালিকা দ্রষ্টব্য ।