পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭২ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড তিনি ইটার জমিদার হরগোবিন্দ প্রদত্ত একটি সমস্যা পূরণ পূৰ্ব্বক উক্ত পরগণাস্থ ফরিদপুরান্তর্গত কিং চামারিয়া হইতে কতক ভূমি ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। বিদ্যালঙ্কার ও বিদ্যারত্ন রামগতি বিদ্যালঙ্কার ও কৃষ্ণগোবিন্দ বিদ্যারত্ন জ্ঞাতি সম্পর্কে পরস্পর ভ্রাতা ছিলেন। কৃষ্ণগোবিন্দ শ্ৰীমদ্ভাগবতের পণ্ডিত ছিলেন; শ্ৰীমহাপ্রভুর বাড়ীতে তিনি সৰ্ব্বদা শ্ৰীমদ্ভাগবত পাঠ করিতেন ও তদুপলক্ষে শ্রোতৃবর্গকে বৈষ্ণব ধর্মের উপদেশ দিতেন। ইনি এক টােল স্থাপন করিয়া ছিলেন, তাহাতে শতাধিক ছাত্র ছিল। এই বংশে তৎপূৰ্ব্বে কেহ চাকুরী করেন নাই। ইনি জ্ঞাতিবর্গের অমতে নবপ্রতিষ্ঠিত শিলচর গবর্ণমেণ্ট হাইস্কুলের প্রধান পণ্ডিতের পদ গ্রহণ করেন ও পরে শ্রীহট্ট গবর্ণমেণ্ট স্কুলে পরিবৰ্ত্তিত হইয়া যোগ্যতার সহিত কাজ করেন। মৈনা নিবাসী মহাফেজ প্রখ্যাত নামা কৃষ্ণপ্রসাদ চৌধুরী ও ঢাকাদক্ষিণের বিজ্ঞবর উকিল কৃষ্ণগোবিন্দ দেব সহ সৰ্ব্বদা তাহার আলাপ প্রসঙ্গ চলিত।৩৪ এই দুই মহাত্মার স্মরণীয় গুণ গ্রামে তৎকালে শহরের সকলই মোহিত ছিল। রামগতি বিদ্যালঙ্কার একজন জিতেন্দ্রিয় সাধুপুরুষ ছিলেন; তিনি এক টোল সংস্থাপন করতঃ চন্দ্ৰকীৰ্ত্তি বাহাদুর পূৰ্ব্বঘণ্টার অভাব পুরণার্থ ২/দুই মণ ওজনের একটা কাংসাঘণ্টা শ্ৰীমহাপ্রভুর বাড়ীতে ব্যবহারার্থ তৎসহ প্রেরণ করেন, উহা এযাবৎ আছে। ঐ ঘণ্টার চতুস্পার্শে বঙ্গাক্ষরে মণিপুরী ভাষায় মণিপুরেশ্বর চন্দ্ৰকীৰ্ত্তি ও মহারাণী কুমুদিনীর নাম ইত্যাদি অঙ্কিত আছে।৩৫ বিদ্যালঙ্কার একদা রাজধানী আগরতলায় গমন করিয়া পণ্ডিত পরিবেষ্টিত মহারাজাধিষ্ঠিত সভায় বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম সম্পর্কে পাণ্ডিত্য পূর্ণ বক্তৃতা দ্বারা সকলের মনোরঞ্জন করিলে মহারাজ তাহাকে উপযুক্ত বিদায়ের সহিত শ্ৰীমদ্ভাগবত গ্রন্থ উপহার দেন, উক্ত গ্রন্থ তাহার গৃহে সংরক্ষিত আছে। মিশ্র বংশীয় অনেকেই দেবত্র ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, ঐ সকল দান প্রাপ্ত ভূমি পরে “বাজেয়াপ্ত" হইয়া গিয়াছিল। দেবত্র বহুতর ছিল; তাহাও জমা ধার্য্যে “চৈতন্যের ছেগ” বলিয়া গণ্য হয়। বৰ্ত্তমানে শুধু নৈবিদ্যের সনদ বাহালে গবৰ্ণমেন্ট হইতে মাত্র ১৮ টাকা বাৎসরিক প্রাপ্ত হওয়া যায় ৩৬ ৩৪. ইতিপূৰ্ব্বে উল্লেখিত হইয়াছে যে “দাক্ষিণাত্য” পাঠ যুক্ত একখানা শ্ৰীকৃষ্ণচৈতন্যেদয়াবলী গ্রন্থ আমরা প্রাপ্ত হইয়া বিশ্বকোষ আফিসে পাঠাইয়া দিয়াছিলাম এবং বঙ্গের জ্ঞাত ইতিহাসে ইহা হইতে তর্কিত পাঠ উদ্ধৃত হইয়াছে। এই পুথিখানা মোনশী কৃষ্ণপ্রসাদ চৌধুরী উক্ত বিদ্যারত্ব হইতে সংগ্রহ করেন। আমরা তাহার গৃহ হইতে উহার অবিকল নকল আনিয়া পাঠাইয়াছিলাম। ৩৫. অঙ্কিত লিপি যথা ঃ “ঢাকাদক্ষিণ শ্ৰী শ্ৰী স্বগীয় মহাপ্রভুদা কলম্বা সমভূগী সরিক অদু কাইরে হইবা শ্রীমতী মণিপুরেশ্বরী কুমুদিনী মহারাণী নাতাদুন মজাইঙঙ শ্রীযুক্ত মণিপুরেশ্বর চন্দ্ৰকীৰ্ত্তি সিংহ মহারাজদামায়াথং পিদা সরিক অমি হৈদা কৎখী ইতি শকাদা ১৮০০ মাহেবৈশাখ। অস্যাঃ ঘটায়া স্বামিত্বং শ্রীরামগতি মিশ্র বিদ্যালঙ্কারস্য নান্যেষমিতি।" ৩৬. এই ১৮ টাকার বৃত্তি অধ্যক্ষ উদয়রাম মিশ্র প্রাপ্ত হইতেন; উদয় রামের মৃত্যুর পর উহা প্রাপ্তি জন্য উদয় রামের “ওয়ারিশ” নিযুক্তি সম্বন্ধে ১২৪৬ বাংলা ১৪ অগ্রহায়ণ তারিখে তাহার পুত্ৰগণ নামে যে “এতেলা" বাহির হয়, শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্র চন্দ্র মিশ্র হইতে আমরা প্রথমে তাহা প্রাপ্ত হই; উহাতে দৃষ্ট হয় যে, উদয় রামের কনিষ্ঠ পুত্র “বিশ্বনাথ শৰ্ম্মা” উপস্থিত হইয়া তাহার নামে বৃত্তি মঞ্জুরের দরখাস্থ দেন। তাহাতে আপত্তি উত্থাপিত হয়, সেই আপত্তির মোকদ্দমায় সদর বোর্ডের নিম্পত্তি মতে ১২৫২ বাংলা ২৭ কাৰ্ত্তিক তারিখে ওয়ারিশ ধাৰ্য্য করা হয়। তাহার নকল এই ঃ