পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তীর্থস্থান । ] , শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত । 9 о 6: কৃষ্ণ চন্দ্রশতপের ন্যায় প্রস্তরের অঙ্গে সমুজ্জ্বল বিন্দু গুলি, দর্শনে বুদ্ধিমানেরও ভ্রম উৎপাদিত হয়। কিন্তু এ হেন শোভার আস্পদ তারকাবলী জলবিন্দু মাত্র। বিন্দু বিন্দু জল চোয়াইয়া উপরের প্রস্তরছাদে ঝুলিতে থাকে, যাত্রী গণের দীপালোক তদুপরি নিপতিত হইয়াই বিচিত্র প্রোজ্জল নক্ষত্রবৎ অনুভূত হয় । স্থলান্তরে স্কুলাকার এক অপূৰ্ব্ব শিবলিঙ্গ, তাহাতে অগণ্য স্বর্ণরেন্থ ঝিকিমিকি করিতেছে। একস্থানে স্তম্বাকার পাচটি প্রস্তর, ইহার নাম ‘পঞ্চ পাণ্ডব ।’ ( এই শিবক্ষেত্রে পঞ্চ পাণ্ডব প্রস্তর দেহে বিরাজ করিতেছেন বলিয়া ব্যাখ্যাত হয় । ) স্থলাস্তরে বট গাছের বোয়ার (শিকড়ের ) মত চারিটি বৃহত্তম প্রস্তর নামিয়াছে; ইহাকে ‘চারিযুগের খাম্বা’ বলে। এরূপ আর এক প্রকাণ্ড প্রস্তরের ভৈরব’ আখ্যা । অতঃপর একটি গভীর গৰ্ত্ত দৃষ্ট হয়, ইহা লক্ষ্মীরভাণ্ডার। তৎপর ‘স্বৰ্গদ্বার।’ স্বৰ্গদ্বার স্থানটি শান্তভাবোদীপক, অতি মনোরম ও তৃপ্তিপ্রদ। বহুক্ষণ অন্ধতমোময় ভুগত্তে শ্রান্তদেহে, ক্লান্তমনে ভ্রমণ করতঃ হঠাৎ যখন স্বৰ্গীয় শ্রত্ৰজ্যোতি রেখা নয়ন পথে পতিত হয়, তখন মন যেন এক উদাস ভাবে কোন অজানা দেশে চলিয়া যায়। নিবিড়তম অন্ধকারে—গুহাভ্যস্তরে একটি ক্ষুদ্র ছিদ্র পথে, উৰ্দ্ধ হইতে অতি সামান্ত,মিটি মিটি আলোক ভিতরে আসিতেছে ; সেই আলোকে, গুহার উদ্ধদিকে অল্প কিছুটা স্থান ঈষৎ আলোকিত হইতেছে ; তাহাতে তথায় যেন কত শোভা ফুটিয়া উঠিয়াছে, ইহাই স্বৰ্গদ্বার। ( লোকের বিশ্বাস যে, স্বৰ্গদ্বার দেখিলে, স্বর্গ গমনে আর বাধা থাকে না । ) এ স্থান হইতে কিছুদূরে, আর একটি অস্তগহবর বা গৰ্ত্ত দৃষ্ট হয়। অতি সতর্ক না হইলে সে গৰ্ত্তপথে প্রবেশের সাধ্য নাই। ইহার ভিতরে কয়েকটি প্রস্তরের "ত্রিশূল" প্রথিত রহিয়াছে ; এস্থানের নাম “যোগনিদ্ৰা ।” সাধারণতঃ যোগনিদ্রা হইতেই দর্শকগণ প্রত্যাবৃত্ত হয়। ইহারপর “পাতল বা নাগপুরী”। ভীষণ সৰ্প গণের আবাস স্থান বলিয়া ব্যাখ্যাত। একথা বড় অসম্ভব নহে। প্রবেশ দ্বার হইতে যোগনিদ্রা পর্য্যন্ত যাইতে প্রায় অৰ্দ্ধ ঘণ্টা সময় লাগে । এই গুহাটি এত বৃহৎ যে, এককালে দুই তিন শত লোক প্রবেশ করিলেও S8