পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাকৃতিক বিবরণ ] শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত । ২৩ ঘি আঠতে বীজ কম থাকে। অাঠি কলা অতি শীতল এবং ইহার পত্র কোমল ও বৃহৎ । ভোজনাদি উৎসবে সাধারণতঃ ইহার পত্রেই লোকে ভোজন করে । শ্ৰীহট্টে সাধাণতঃ পুষ্করিণীর তীরে ও বাড়ীর চারিধারে কদলী বৃক্ষ রোপণ করা হয়। কলা একটি আয়কর ফল হইলেও ধান ব্যতীত অপর ফল মাঠে রোপণ করা শ্ৰীহট্টবাসিগণ উপযুক্ত মনে করেন না । আম্র ও কাটাল শ্রীহট্টের সর্বত্রই জন্মে। চৌকি ও বাণিয়া চঙ্গের আম্র অপেক্ষাকৃত মিষ্ট, ও তাহাতে পোকাও কিঞ্চিৎ অল্প হয়। তরফ,জলডুব, কুসিয়ার কুল প্রভৃতি স্থানের কাটাল মিষ্টতর, কদলীর ন্যায় আম্র ও কাটালের গাছ সাধারণতঃ বাড়ীর চারি পাশেই লাগান হইয়া থাকে। শ্ৰীহট্টে বহুজাতীয় জামির আছে। (১) মাথে বা ‘জাম্ব রা, (বাতাপিলেবু), ভিতরে লাল ও সাদা ভেদে দুই জাতীয়। ইহার এক একটা খুব বড় হইয়া থাকে। (২) পাণি’ বা ‘স্কুটা জামির'—খাইতে প্রায় মাথো জামিরের মত, ইহাতে শীতলতা গুণ অধিক এবং আকৃতি মাথোর মত গোল নহে । (৩) ‘জাড়া জামির’ ও ‘জাজি জামির’ —জাড়া জামিরের পুরু বাকলের সবুজ বর্ণ অংশ ফেলিয়া দিয়া, অবশিষ্ট নারিকেলের মত খাওয়া যায় ; ইহা শীতলতা গুণবিশিষ্ট । জাজি’ আকৃতিতে ক্ষুদ্র, গুণে সামান্ত ইতর বিশেষে মাথোর মত । (৪) “এলাচি জামির’ আদা জামির’ এবং ‘চস্নি বা কলম্বক জামির ভক্ষ্য নহে, অন্ন ব্যঞ্জনাদি সুগন্ধ করিবার জন্য ইহা ব্যবহৃত হয়। এলাচি ও আদা জামিরের গন্ধ উৎকৃষ্ট। ইহা লংলা, ঢাকদক্ষিণ পরগণায় অধিক পরিমাণে জন্মে। তদ্ভিন্ন— (৫) সাতকড়া কাটা’ করুণ’ প্রভূতি আরও অনেক জাতি জামির আছে । সাতকড়া জয়ন্তীয়ায় বহু পরিমাণে উৎপন্ন হয় । গোলাবজাম, কালজাম, জাম্রল, এওলা বা আমলকী, বদরী, বেল, বন আম্র ও কাটাল লেবু বা জামির।