পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৭০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ե8 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত । [ ২য় ভাঃ ৫ম খঃ জল পুলিশের নৌকা দস্য সন্ধানে নদী পথ ভ্রমণ করিত। ইহাদের নৌকায় "নাগরা” থাকিত ; দারগার নায়ের নাগরার ধ্বনিতে লোক চমকিত ও ত্ৰাসিত হইত। কাছারীর আমলাগণ, এমন কি হাকিম পর্য্যন্ত বেজায় ঘুষ প্রিয় ছিলেন। বিচারে ঘুষ প্রদানই মোকদ্দমা জয়ের কারণ ছিল । ঘুষের জোরে একজনের লম্পত্তি অপরের হইয়া যাহত । তবে এখনকার মত এত মিথ্য সাক্ষ্য ছিল না। আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য ভয়ানক পাপ কাজ বিবেচিত হইত । কিন্তু অনেক বিষয়ই পঞ্চায়েতের দ্বারা মীমাংসিত হহত, তাহাতে ন্যায়ের মৰ্য্যাদা ৰিশেষ ভাবে রক্ষিত হইত। ধরিত্রী এত অমুর্বরা ছিল না, ক্ষেত্রে অল্পায়াসে প্রচুর শস্ত জন্মিত । গাভীতে যত দুধ দিত, গাছ যত বড় হহত ও যত বেশী ফল ধরিত, এখন তাহার অৰ্দ্ধা অদ্ধি হইয়াছে। রোগ-শোক এত অধিক ছিল না ; তখন শড়কের বাহুল্য ছিল না—দেশের জল প্রবাহ ভালরূপ নিষ্কাশিত হইবার ও বাধা ছিল না । মুতরাং ম্যালেরিয়ার এত প্রকোপ হয় নাই। ওলউঠাই একমাত্র মহামারী ছিল, বহু বৎসর পরে ইহা এক একবার দেখা দিত। লোক সবল ও সুস্থদেহ, প্রফুল্ল ও শ্রম সহিষ্ণু, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ও ধৰ্ম্ম প্রাণ ছিল। দুর্ভিক্ষ্য তখন এইরূপ “গামের লাগা” ছিল না ; এক পেটের জন্য লোকের কোন চিন্তাই করিতে হইত না । গৃহস্থের সন্তানাদিও সংখ্যায় অধিক, দীর্ঘজীবী ও সুস্থকায় হইত। স্ত্রীলোকের ব্যবহারে এখন যেরূপ বিলাসিতার লীল পরিলক্ষিত হয়, তখন তদ্রুপ ছিল না ; এ বিষয়ে শ্ৰীযুক্ত সারদ চরণ ধর মহাশয় আমাদিগকে স্ত্রীলোকের এইরূপ লিখিয়া পঠাইয়াছেন :-"ব্রাহ্মণ ও ভদ্র ব্যবহার । লোকের মেয়ে মাত্রেরই কলসী দিয়া পুষ্করিণী হইতে জল আনয়ন করিতে, পাকশাক করিতে ও চরথা দিয়া স্থত কাটিতে হইত, ইহাতে কেহই লজ্জ মনে করিত না । স্থত কাটার পয়সা মেয়েদের অলঙ্কারের ন্যায় নিজস্বষ্ট হইত। বিধবারা স্থত কাটিয়াই শিশু সন্তান নিয়া জীবিকা মিৰ্ব্বাহ করিতে সক্ষম হইত; কাছার ও গল গ্রহ ন হইয়াও থাকিতে পারিত । গৃহস্থবাড়ীতে. নিত্য ব্যবহার্য্য শাকসঙ্গী প্রধানতঃ মেয়েদের যত্বেই