পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-দ্বিতীয় খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১৭৬ করিয়া রাখেন। মোহাম্মদ আসগরের পুত্র আরজদ আলী বিদ্যোৎসাহী লোক ছিলেন, তিনি ১৮৯২ খৃষ্টাব্দে রজাকপুরে লোকাল বোর্ডের সাহায্যে একটি মধ্যবঙ্গ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেন। র্তাহার মধ্যম পুত্র শ্রীযুত মসজিদ আলী জায়গীরদার এই বংশ বিবরণ প্রেরণ করিয়াছেন। সমাপ্ত করিমগঞ্জ সবডিভিশনের যে সামান্য বিবরণ পাওয়া গিয়াছে, তাহা এই স্থলেই পরিসমাপ্ত হইল। প্রথমেই সবডিভিশনের অবস্থান ও নামাদি কীৰ্ত্তন পূৰ্ব্বক প্রাচীন দেব বিগ্রহ বাসুদেব ও তাহরা প্রতিষ্ঠাতা পূজাধিকারী ব্রহ্মণ বংশের কথা সংক্ষেপে বলা গিয়াছে। তৎপর পরাশর গোত্রীয় সাম্প্রদায়িক বিপ্রবর্গের কথা প্রসঙ্গে অষ্টাবিংশতি প্রচীপ প্রণেতা মহেশ্বর ন্যায়ালঙ্কারের পরিচয় প্রদত্ত হইয়াছে। তাহার পর সাম্প্রদায়িক কৃষ্ণাত্রেয় ও স্বর্ণকৌশিকের কথা—তৎপ্রসঙ্গে সিদ্ধপুরুষ মধুসূদনের আখ্যান বলা গিয়াছে। তাহার পর পঞ্চখণ্ডের মিশ্রবংশ বিবরণে প্রসঙ্গতঃ হাজঙ্গ জাতির বৈষ্ণব-ধৰ্ম্মগ্রহণ বাৰ্ত্তা, জ্ঞানবর ও কল্যাণবরের কথা ইত্যাদি আলোচিত হইয়াছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে সেনগ্রামের পুরকায়স্থগণের কথার পরে লাউতার কাশ্যপ ও পরাশর বংশের কথা এবং ভট্টশ্রীর রথতির বংশের বিবরণ ও তৎপরে চাপঘাটের দেশমুখ্য বংশ কথা তাহার পর পাথারিয়ার দৈ-গোষ্ঠি ও ছোটলিখার ভরদ্বাজ ও গৌড়বংশ বিবরণ প্রদত্ত হইয়াছে। তৎপর আগিয়ারামের চৌধুরী বংশের নামোল্লেখ পূবর্বক ব্ৰহ্মানন্দ ও জলডুবের জমিদার বংশ কথার সহিত ব্রাহ্মণ বিভাগ সমাপ্ত হইয়াছে। তৃতীয় অধ্যায়ে পঞ্চখণ্ডের সেন, পাল, দত্ত ও দাস বংশের নামোল্লখ মাত্র করা গিয়াছে; এইরূপ লাউতা সম্বন্ধেও, লাতু সম্বন্ধেও তাহাই। তত্ৰত্য দত্ত ও স্বামী বংশের নামোল্লেখ করিয়া অষ্টপতি বংশের কথা সামান্যতঃ বলিযাছি। আমরা বহু চেষ্টা করিয়াও এসব স্থানের প্রাচীন ও সন্ত্রান্ত বংশগুলির সম্যক বিবরণ প্রাপ্ত হই নাই। অতঃপর ঢাকা উত্তরের রাউৎ বংশের সম্বন্ধে দুই চারিটি কথা বলা গিয়াছে। তাহার পর ছোটলিখার আদিত্যগণের বিবরণ এবং ডোয়াদি ও এগারশতীর পুরকায়স্থ কথা বলা গিয়াছে। আমরা দত্ত গ্রামের দত্ত বংশের বিবরণ সংগ্ৰহ করিতে পারি নাই বলিয়া দুঃখিত আছি। এ অধ্যায়ে শেষে বড়লিখার সেনাপতি বংশের আগমন সম্বন্ধে ২/৪টি কথা বলা গিয়াছে। চতুর্থ অধ্যায়ের বড়লিখার পুরকায়স্থ বংশের বিচিত্র বংশ কাহিনী এবং প্রতাপগড়ের আধুনিক বিবরণ প্রসঙ্গে জফরগড়ের হিন্দু চৌধুরী বংশের কথা বর্ণিত হইয়াছে। এই অধ্যায়েই তত্রত সরকার বংশের উল্লেখে কবি সত্যরামের কথা আলোচিত হইয়াছে; তৎপর অপর স্থানের “দুটি বংশ কথা" বলিয়া এ অধ্যায়ে সমাপ্ত করা গিয়াছে। পঞ্চম অধ্যায়ে মোসলমান বংশ বর্ণন। প্রথমেই ফারমপাশার চৌধুরী বংশ কথা দেওয়া গিয়াছে, তৎপর পঞ্চখণ্ড কালা ও শাহবাজপুরের চৌধুরী বংশ কথা এবং বাহাদুরপুরের বংশোল্লেখ আছে। তৎপর রজাকপুরেব জায়গীরদার বংশ বিবরণের সহিত এ খণ্ড পরিসমাপ্ত হইয়াছে। করিমগঞ্জের নানাস্থানে অনেক সন্ত্রান্ত বংশীরগণ বাস করিতেছেন, তাহাদের বংশ কীৰ্ত্তিও কম নহে, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা চেষ্টা করিয়াও তত্ত্যবং পাই নাই পাইলে এই জঙ্গলাচ্ছাদিত গ্রামগুলির মধ্যে সুগন্ধি কত কুসুমের পরিচয় মিলিত; দেখিতে পাইতাম-–জঙ্গলের অন্তরালেও মহামূল্য রত্ব জুলিয়া থাকে।