পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

§ W ဖဲ့ ১৯১ দ্বিতীয় অধ্যায় : ইটা, বানচাল প্রভৃতি স্থানের কাশ্যপ গোত্রীয় ব্রাহ্মণ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত রতিরামের গৌরবল্লভ ও হরবল্লভ নামে দুই পুত্র ন্যায়শাস্ত্র অধ্যয়নের জন্য মিথিলা গমন করিয়াছিলেন, তন্মধ্যে হরবল্লভ উপাধি পরীক্ষায় “তর্কভূষণ” খ্যাতি লাভ করেন। উপাধি প্রাপ্তির পব তিনি মুর্শিদাবাদ রাজধানীর সন্নিকটে গঙ্গাতীরে তপস্যাতে রত হইয়াছিলেন। সিদ্ধমালা অমাবস্যাতে চন্দ্রোদয়ের বিচিত্র কথা ইতিপূৰ্ব্বে বহুস্থানে বলা গিয়াছে মুর্শিদাবাদের নবাব সভায় এক অমাবস্যা তিথিতে এই নৈয়ায়িক পণ্ডিত নাকি ভ্রমতঃ সেদিন পূর্ণিমা বলিয়া ফেলেন ও পরে নিজ বাক্যের সত্যতা পালনার্থে তপোবনে চন্দ্র প্রদর্শন করিয়াছিলেন। নবাবগণ পণ্ডিত পাইলেই কেবল তিথি জিজ্ঞাসিতেন, আর জিজ্ঞাসার তারিখটাও অমাবস্যাতেই পড়িত, অবস্থা বিবেচনায় ইহা বলিতে হয়! হরবল্লভ একজন তপোনিষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন, একথার প্রমাণ দিতে তদীয ব্যবহৃত “মহাশঙ্খময়ী সিদ্ধমালা” বৰ্ত্তমান রহিয়াছে। তাহার অধস্তন তিন পুরুষ ক্রমানুসারে এই সিদ্ধমালা জপ করিয়া সিদ্ধিলাভ করেন। তর্কভূষণ মুর্শিদাবাদ হইতে দেশে আসিলে অচিরেই তাহার গুণগ্রাম প্রচারিত হইয়া পড়ে; শ্রীহট্টের নবাব মোহাম্মদ জানবাহাদুর ২১ জলুস ১৫ই রমজান তারিখের সনন্দে (নং ৭১) তাহাকে ইট ও আলীনগব হইতে ৬১ ৷৷৬ ৬প ভূমি ব্ৰহ্মত্র দান করেন; হরবল্লভ ১১৭৫ বাংলা পর্যন্ত জীবিত ছিলেন, তৎপর বর্ষে তাহার মৃত্যু হইলে তদীয়পুত্র বামবল্লভ ভট্টাচাৰ্য উক্তভূমি “তছরূপ" কবেন। পিতার মৃত্যুর পরে রামবল্লভ মুর্শিদাবাদে গমন কবিয়াছিলেন এবং তপঃস্থলে অবস্থিতি পূবর্বক মহাশঙ্খময়ী মালা জপ করতঃ সিদ্ধি লাভ করেন। হববল্লভের পুত্রের নাম বাধাবল্লভ ও রতুবল্লভ। রত্নবল্লভ পিতামহের আশ্রয়ে গিয়া কয়েক বৎসব মালা জপ কবিয়াছিলেন, তথা হইতে দেশে আসিয়া শিবমন্দির ও দুর্গামন্দির নিৰ্ম্মাণ পূৰ্ব্বক অতুল যশঃ ও পুণ্যভাগী হইয়াছিলেন। সতী কমলাবতী বত্ববল্লভের পত্নী এক আদর্শ সতী ছিলেন, তাহার নাম কমলাবতী দেবী। পতির মৃত্যুর পর তিনি স্বামী দেহ বক্ষে ধারণ করিয়া তনুত্যাগ করিতে উদ্যত হন; আত্মীয় স্বজন তাহাকে বিরত করিতে কত চেষ্টা করিলে, কিন্তু তিনি কোন নিষেধ বাধা না মানিয়া জ্বলন্ত অনলকুণ্ডে দেহ সমর্পণ পূৰ্ব্বক হিন্দু রমণীর সতীত্বের উদাহরণ প্রদর্শন করিয়া গিয়াছেন। আখালিয়া তীরে সেই “সতীকুণ্ড” অদ্যাপি বিদ্যমান আছে। অভিশাপ রত্নবল্লভের চারিপুত্র, তন্মধ্যে কনিষ্ঠপুত্র নিঃসন্তান ছিলেন। দ্বিতীয় পুত্র রঘুদেব পরম সাধক ৭ শ্রীহট্রেব ইতিবৃত্তের পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য খণ্ড ৩য অধ্যায়ে “অনির্দিষ্ট কালীয় আমিলদের নাম”তালিকার নবাব মোহাম্মদ জানবাহাদুবেবনাম লিখা হইয়াছে। এই সনন্দে “২৩ জলুস"ত্মবিখ প্রাপ্ত হওয়ায়,উহা সম্রাট মোহাম্মদ শাহের বাজারোহণের কাল বলিয়া অবধারিত হইল। কাজেই এই সনন্দ প্রাপ্তিব কাল ১৭৪২ খৃষ্টাব্দ। এই সমযেই নবাব মোহাম্মদ জ্ঞানেব শ্রীহট্ট শাসন কাল। ইনি সম্ভবতঃ শ্রীহট্টের নায়েব ফৌজদার ছিলেন।