পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৪৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত ২৮ অজ্ঞান ঠাকুর সৰ্ব্বজীবন সমদৰ্শী ছিলেন, যে কোন জাতীয় সাধু ব্যক্তিকেই তিনি শ্রদ্ধা করিতেন। তিনি সৰ্ব্বদাই হরি সঙ্কীৰ্ত্তন করিতেন। শেষাবস্থায় তাহার কাছে এতবেশী সংখ্যক লোক ঔষধাদির জন্য আসিতে আরম্ভ করে যে, তিনি একটু মাত্র সময় একাকী থাকিবার অবকাশ পাইতেন না। এইরূপে জনসমাগমে ক্রমাগত উপদ্রুত হইতে থাকিলে, একদা প্রভাতে যখন বহুলোক সমবেত হইল, তখনও তিনি মন্দির হইতে বহির্গত হইলেন না; এইরূপে সাত দিন গেল, মন্দিরের দ্বার সাত দিনই রুদ্ধ রহিল; অষ্টম দিবসে সকলে পরামর্শ করিয়া দ্বার ভগ্ন করিয়া ফেলিল ও দেখিতে পাইল যে গৃহ শূন্য রহিয়াছে এবং একদিকে একটা গভীর গৰ্ত্ত হইয়া গিয়াছে এই গত দৃষ্টে সকলেই সাধুর সংগোপন অনুমান করিয়া লইল । - কেশবলাল গোস্বামী কেশবলাল জনতরির স্বর্ণ কৌশিক গোত্রীয় ব্রাহ্মণকুলে জন্মগ্রহণ করেন। তাহার পিতার নাম রতিনাথ। রতিনাথ সংসার স্পৃহা রহিত ছিলেন এবং দেবাচ্চনায় সদা রত রহিতেন। বাল্যকাল হইতেই কেশবলালের চরিত্রে যে চিত্র প্রকটিত হয়, কেশব যে একজন সিদ্ধ পুরুষ ছিলেন, জন্মান্তরীন যোগসিদ্ধি যে বাল্যবধি তাহাতে বিকশিত হইয়াছিল, তদীয় বাল্য চরিত্র দৃষ্টে সকলেই তাহা বুঝিয়াছিল এবং তজ্জন্য বাল্যবধিই তিনি আদৃত ও ভক্তিপাত্র রূপে পরিগণিত হইয়াছিলেন। যখন কেশবলাল ৪/৫ বৎসরের বালক, তখন জনৈক প্রতিবেশী একছড়া কাচা কলা তদীয় পিতৃপূজিত শ্রীধর দেবতাকে ভেট দিয়াছিল। এই কদলী দেখিয়া শিশু কেশব কদলীর লোভে কাদিতে থাকেন। নিকটে ২/৩ টি স্ত্রীলোক ছিল, দেবতার জন্য অগ্রভাগ রাখিয়া একটি কদলী শিশুকে দিতে তাহারা বলিলে কেশব-জননী পুত্রের হাতে কটি কদলী দেন। কথিত আছে যে স্ত্রীলোকেরা দেখিয়া বিস্মিত হইয়াছিল যে, কেশবের হাতে থাকিতে থাকিতে কাচা কলা পাকিয়া উঠিয়াছিল। এ কথা গ্রামে প্রচারিত হইলেই শিশুকে পূৰ্ব্ব সিদ্ধ মহাত্মা জ্ঞানে সকলে বিশেষভাবে দেখিতে আরম্ভ করে। কেশবলাল যখন বার বৎসরের বালক, তখন একটি গোবৎসে লইয়া সৰ্ব্বদা খেলা করিতেন, বাছুরটিকে নিকটবৰ্ত্তী জঙ্গলে চরাইতে লইয়া যাইতেন, এটিকে লইয়াই ব্যস্ত থাকিতেন, লেখা পড়ায় কিছুমাত্র মনোযোগ দিতেন না। পিতা বহুচেষ্টা করিয়াও যখন পুত্রকে পড়াইতে পারিলেন না, তখন তিনি নিরাশ হইয়া সে চেষ্টায় বিরত হন। আট বৎসর বয়সে কেশবের উপনয়ন হয় তৎকাল পর্যন্ত তাহার পুথির সহিত পরিচয় হয় নাই, সেই বৎস সহ বনে গমনই র্তাহার একমাত্ৰ কাৰ্য্য হইয়া দাড়াইয়াছিল। ইহার অল্পপরে একদিন বৎসচারণ হইতে বাড়ীতে আসিয়াই বৎস কাদিতে কাদিতে মাকে বলিলেন—“কানাইদাদা বলিয়াছে!” মা মনে করিলেন, ছেলে কোন বালকের সহিত খেলিতে বুড়িয়াপুন মং . আষ্ট কাহন দুই পন মিস্থান লেখা যায় এ হার উৎপন্ন জমার কালাম মবলগ ২১ একইস কাহন তুমাকে পুজে ব্ৰহ্মাউত্তর কপিবয়া দিলাম এই মবলগ মজকুব আমবার পরগণা তহুি৩ কিস্তি হনে হাকিম পাইলাম তুমাকেও মিনা কবিয়া দিলাম তুমি হাকিমেব সনদ হাসীল কবিয়া পুজা কলিয়া তসব সন্তান ও শিষ্যক্রমে ভোগ দখল কবহ এব উপর আমরাব কোনু দাবী নাই। এতদৰ্থে পত্র করিয়া দিলাম। সন ১১৬৪ তারিখ ২০।” ৩৩. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত উত্তরাংশ ৩য ভাঃ ৪ৰ্থ খঃ ৩য় অধ্যায় দেখ।