আন্দোলনের দিকে ঝুঁকিলেন, গোপন কার্য্য প্রণালীর পরিবর্ত্তে আইন সঙ্গত নিয়মতান্ত্রিকতা অনেকের নিকট ভাল মনে হইতে লাগিল। বলশেভিক নেতারা দেখিলেন, রাজনীতিক্ষেত্রে ইহা আত্মহত্যার নামান্তর মাত্র—এ যেন “জীবনধারণের উপায় পরিত্যাগ করিয়া জীবন রক্ষার চেষ্টা”। লেনিন দেখিলেন, কেবল জারের অত্যাচার হইতে নহে, আভ্যন্তরীন এই দৌর্ব্বল্য হইতে দলকে রক্ষা করিতে হইবে। কেন্দ্রীয় দলের মধ্যে যে কোন মূল্যে ঐক্য স্থাপনের যে আগ্রহ দেখা দিল লেনিন তাহার বিরুদ্ধে তীব্রভাবে লেখনী চালনা করিতে লাগিলেন। এই সময় ট্রট্স্কি মেন্শেভিক ও বলশেভিক উভয় দলের মিলনের জন্য ভিয়েনা হইতে লেখনী চালনা করিতে লাগিলেন। তখন লেনিনের নেতৃত্ব ও অটল আদর্শ নিষ্ঠার পরিচয় জ্বলন্ত পাবকের মত প্রদীপ্ত হইয়া উঠিল। ১৯১০ সালের ১১ই এপ্রিল লেনিন গোর্কীর নিকট এক পত্রে লিখিয়াছিলেন, “.......এই সকল আত্মকলহ, কুংসা, বিলাপ অনুতাপের মধ্যে বসিয়া আমি অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া উঠিয়াছি। কিন্তু মনোবিকারের নিকট আত্মসমর্পণ অন্যায়। বিপ্লবের পূর্ব্বে অপেক্ষা বর্ত্তমানে নির্ব্বাসন আমার পক্ষে শতগুণ অসহ্য হইয়া উঠিয়াছে। নির্ব্বসিতদের মধ্যে পরস্পর কলহ অবশ্যম্ভাবী, কিন্তু আমি জানি এই শ্রেণীর কলহ দীর্ঘদিন থাকিবেনা। ......দলের উন্নতি এবং সোশাল ডেমোক্রেটিক আন্দোলনের বিস্তার বর্ত্তমানের নারকীয় বাধাবিপত্তির মধ্য দিয়াও অগ্রসর হইতেছে। সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দল হইতে বিপথগামী প্রতি-বিপ্লবী এবং তথাকথিত ঐক্যকামীদিগের বহিষ্কারের কাজ দ্রুত অগ্রসর হইতেছে। মতবাদের দিক দিয়া আমরা আমাদের স্বাতন্ত্র্যকে সমস্ত সংশয় অনিশ্চয়তা হইতে মুক্ত করিয়াছি। মেনশেভিকরা তাহাদের ঝুলির
পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/৪৭
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন
৩৯