পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮৪
কাহিনী

কেমনে বাঁচিতে হয় শ্রীচরণ সেবি
সে শিক্ষাও লভিয়াছি।
গান্ধারী। বৎসে, অমঙ্গল 
একেলআ তোমার নহে। লয়ে দলবল
সে যবে মিটায় ক্ষুধা, উঠে হাহাকার,
কত বীররক্তস্রোতে কত বিধবার
অশ্রুধারা পড়ে আসি— রত্ন-অলংকার
বধূহস্ত হতে খসি পড়ে শত শত
চূতলতাকুঞ্জবনে মঞ্জরীর মতো
ঝঞ্ঝাবাতে। বৎসে, ভাঙিয়ো না বন্ধ সেতু।
ক্রীড়াচ্ছলে তুলিয়ো না বিপ্লবের কেতু
গৃহ-মাঝে! আনন্দের দিন নহে আজি।
স্বজনদুর্ভাগ্য লয়ে সর্ব অঙ্গে সাজি
গর্ব করিয়ো না মাতঃ। হয়ে সুসংযত
আজ হতে শুদ্ধচিত্তে উপবাসব্রত
করো আচরণ; বেণী করি উন্মোচন
শান্ত মনে করো বৎসে, দেবতা-অর্চন।
এ পাপসৌভাগ্যদিনে গর্ব-অহংকারে
প্রতিক্ষণে লজ্জা দিয়ো নাকো বিধাতারে।
খুলে ফেলো অলংকার, নব রক্তাম্বর;
থামাও উৎসববাদ্য, রাজ-আড়ম্বর;
অগ্নিগৃহে যাও পুত্রী, ডাকো পুরোহিতে—
কালের প্রতীক্ষা করো শুদ্ধসত্ত্ব-চিতে।

ভানুমতীর প্রস্থান

দ্রৌপদীসহ পঞ্চপাণ্ডবের প্রবেশ

দ্রৌপদী। আশীর্বাদ মাগিবারে এসেছি জননী, 
বিদায়ের কালে।