আমার মতে, একটু যদি সংক্ষেপেতে সারো
অধিক ক্ষতি হবে না তায় কারো।’
বাঁকিয়ে ভুরু পাকিয়ে চক্ষু বিনু বললে খেপে,
‘কক্খনো না, বলব না সংক্ষেপে।
আপিস যাবার তাড়া তো নেই, ভাব্না কিসের তবে?
আগাগোড়া সব শুনতেই হবে।’
নভেল-পড়া নেশাটুকু কোথায় গেল মিশে;
রেলের কুলির লম্বা কাহিনী সে
বিস্তারিত শুনে গেলেম আমি।
আসল কথা শেষে ছিল, সেইটে কিছু দামি।
কুলির মেয়ের বিয়ে হবে, তাই
পৈঁচে তাবিজ বাজুবন্ধ গড়িয়ে দেওয়া চাই।
অনেক টেনেটুনে তবু পঁচিশ টাকা খরচ হবে তারই,
সে ভাব্নাটা ভারী
রুক্মিনিরে করেছে বিব্রত।
তাই এবারের মতো
আমার ’পরে ভার
কুলিনারীর ভাব্না ঘোচাবার।
আজকে গাড়ি-চড়ার আগে একেবারে থোকে
পঁচিশ টাকা দিতেই হবে ওকে।
অবাক কাণ্ড একি!
এমন কথা মানুষ শুনেছে কি?
জাতে হয়তো মেথর হবে কিম্বা নেহাত ওঁচা,
যাত্রীঘরের করে ঝাড়ামোছা,
পঁচিশ টাকা দিতেই হবে তাকে!
এমন হলে দেউলে হতে ক দিন বাকি থাকে!
‘আচ্ছা আচ্ছা, হবে হবে। আমি দেখছি, মোট
পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৬১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পলাতকা
৫৫৯