পাতা:সতী-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সতী

শোভা পাইতেছে। তাহা দেহে বিলম্বিত, এবং সীমান্তপ্রদেশ ঈষৎ স্পর্শ করিয়া রহিয়াছে। হস্তে ও কণ্ঠে রুদ্রাক্ষবলয়, আলুলায়িত কেশরাশিতে একটি অতসীকুসুমের মাল্য গ্রথিত। তিনি একটি কর্ণিকার তরু সন্নিহিত বিল্ববৃক্ষ হইতে একটি বৃহৎ বিল্বফল পাড়িতেছেন। বিল্বের কণ্টকরাশি দেবীর স্পর্শে পল্লবে পরিণত হইয়া যাইতেছে, এবং দেবী ছুঁইতে না ছুঁইতেই শাখা আনম্র হইয়া পড়িতেছে। তৎসমৃদ্ধ ফলগুলি দেবীর স্পর্শ-প্রত্যাশায় আপনি আপনি করতলে আসিতেছে। নারদকে দেখিয়া দেবী বলিলেন, “নারদ ভূপর্য্যটনই তোমার কর্ম্ম। আমার পিতা দক্ষের গৃহের কোন সংবাদ জান? আমার মাতাকে অনেক দিন দেখি নাই, আমার দুঃখিনী মাতাকে দেখিতে বড় সাধ যাইতেছে।” সতীর চক্ষে একবিন্দু অশ্রু দেখা দিল।

 নারদ এ প্রকার প্রশ্নের প্রত্যাশা করেন নাই। তিনি কি উত্তর দিবেন! দেবর্ষি মিথ্যা কথা বলিবেন না; শিবের আদেশ অমান্য করাও তাহার পক্ষে শোভন নহে। তিনি দ্বিধা-কুণ্ঠিত চিত্তে বলিলেন, “দেবি, দক্ষ এবং প্রসূতি ভাল আছেন, আমি কল্য তাঁহাদিগকে দেখিয়া আসিয়াছি।” দেবী বলিলেন, “নারদ তুমি তাঁহাদিগকে দেখিয়া আসিলে, তাঁহারা কি আমার কথা কিছুই বলিলেন না?” নারদ নিরুত্তর রছিলেন।

 দেবীর সন্দেহ ক্রমেই বৃদ্ধি পাইল। তিনি উৎকণ্ঠিত স্বরে বলিলেন, “তুমি এরূপ করিতেছ কেন? তবে কি তাঁহারা কুশলে নাই?” নারদ বলিলেন। “তাঁহারা ভাল আছেন, কিন্তু মা, আমায় ক্ষমা করিবেন, পিতৃকুলের কোন প্রশ্ন আমায় করিবেন না।”

 এই বলিয়া নারদ বীণা বাজাইয়া প্রস্থানপর হইলেন। তত্ত্বপূর্ণ

২৩