স্বয়ং ভৃগু হোতা, মন্ত্র উচ্চারণ-কালে তাঁহার বক্ষঃ কম্পিত হইতেছে কেন?
দক্ষের অভিমানদৃপ্ত চিত্ত ক্ষণে ক্ষণে কোমল হইয়া পড়িতেছিল। যজ্ঞশালার পার্শ্বে একটি নিভৃত প্রকোষ্ঠ সতীর খেলাঘর ছিল। কয়েকটি সুবৃহৎ স্তম্ভের অবকাশ-পথে সেই গৃহ দৃষ্টিগোচর হওয়াতে দক্ষের মানসপটে সতীর মুখখানি অঙ্কিত হইতেছিল। কিন্তু অভিমান মমতাকে স্থান ছাড়িয়া দিতে প্রস্তুত নহে। ক্ষণমাত্র অন্যমনস্ক থাকিয়া দক্ষ পুনরায় উৎসবে ব্যস্ত হইয়া পড়িতেছিলেন।
সতী দক্ষালয়ে আসিতেছেন। আসিবার সময় উৎসাহে মহাদেবকে প্রণাম করিতে ভুলিয়া গিয়াছিলেন। কিন্তু কৈলাসের অভ্রংলেহী চুড়া যখন নেত্রপথ উত্তীর্ণ হইয়া গেল, তখন সতীর ধ্যানস্থ-শিবমূর্ত্তি কেবলই মনে পড়িতে লাগিল এবং কেন যে তাঁহার এমন ভ্রান্তি হইল, তজ্জন্য অত্যন্ত অনুতাপ হইতে লাগিল।
সিংহ উল্কার মত আকাশ হইতে অবতরণ করিতেছে। পিণাকপাণির বিরাট শূলহস্তে ভ্রকুটি-কুটিল ক্রূরকটাক্ষ নন্দী পশ্চাতে আসিতেছেন। দেবীর কপালে সিন্দুরবিন্দু, কেশরাজি নিবিড় আগুল্ফলম্বিত, তাহা সিংহের পৃষ্ঠ বাহিয়া পড়িয়াছে। যেন নিবিড় মেঘপংক্তি ভেদ করিয়া উল্কা ছুটিতেছে। রুদ্রাক্ষের মাল্য ত্রিগুণিত হইয়া দেবীর বক্ষে বিলম্বিত। কর্ণে কুণ্ডল। দেবী বল্কলবসনা, অক্ষবলয়া, ললাটের ঊর্দ্ধে কেশকলাপে বিল্বদল ও জবাকুসুম আবদ্ধ। শ্বেতচন্দনে ললাট দীপ্ত।