পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সৰু পৰ আষাঢ়, ১৩৫ একটা অন্যগুলাের পথ আটকে রেখে দেয়, কাজেই একটা যদি হোছট খেয়ে পড়ে ত অন্য যেগুলাে তাকে ঠেস দিয়ে দাড়িয়ে থাকে সেগুলােও টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যায়। যেদিন প্রথম সংযমের ধাঁধ ভেঙ্গে গেল সেদিন থেকে এইটেই আমি সবার লক্ষ করে আসছি যে একে একে অনেকগুলো সংযমই তার সঙ্গে আলগা হয়ে আসছে। আমি যে মদ খেতে শুরু করেছি এ কথাটা বাবা এবং মা'র কাছে যথাসম্ভব লুকোবার চেষ্টা করতুম কিন্তু নীরদার কাছে কোন দিন সাবধান হই নি বা সাবধান হবার কোন দরকার বোধ করি নি। এতে যে তার কিছু মনে করবার আছে একথা কোন দিন মনেই আসে নি। হাজার হােক আমি স্বামী আর সে স্ত্রী। লােকে কথায় বলে অন্যায় কখন চাপা থাকে না—আমার অন্যায়ও বেশী দিন চাপা রইল না—পাড়াময় কানাঘুসাে হয়ে গেল। সেদিন সন্ধ্যার সময় কি একটা কাজে নিজের ঘরের দিকে যাচ্ছিলুম, বারান্দা থেকে শুনতে পেলুম ঘরের ভিতর বাড়ীর টেপী নীরদাকে বলছে- “তা তুই যদি এতদিন টের পেয়েছিস ত বারণ করিস নি কেন? ধন্যি মেয়ে যা হােক তুই।” “তা নাকি আবার বারণ করা যায়।” “কেন যায় না, আমরা হলে ত বকে ঝােকে অমথ্য করতুম আর তুই বারণ করতে পারবি নি।” “না তা পারবাে না।” “সে কি রে, তা না হলে দিন দিন যে বেড়ে উঠবে।”