পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব, চতুর্থ সং হােট গল্প - -“হলও আট মাত্রার, বারাে মাত্রার, যােত মাত্রার হয়ে থাকে, অতএব যদি বলা যায় যে পদ্য ছন্দের সীমানা টপকে গেলে, তা গদ্য না হতে পারে কিন্তু তা পদ্য হয় না, তাহলে সে কথাও তােমাদের কাছে গ্রাহ নয়।” সুপ্রসন্ন তর্কের এ পেঁচের কাটান হাতের গােড়ায় খুঁজে না পেয়ে বলেন- -“আচ্ছা তা যেন হল। গল্প, গল্প হওয়া উচিত এ কথা বলে বীরবল কি তীক্ষ্ণ-বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছেন। আমরা জানতে চাই গল্প কাকে বলে ?” প্রশান্ত অতি প্রশান্ত ভাবে উত্তর করলেন- -“গল্প হচ্ছে সেই জিনিস যা আমরা করতে জানি নে।” -“শুনতে ত জানি?” -“সে বিষয়েও আমার বিশেষ সন্দেহ আছে। তােমরা ভালবাসাে শুধু বর্ণনা আর বক্তৃতা, যার ভিতর গল্প ফোটা দূরে যা শুধু চাপা পড়ে যায়। বড় গল্পের তোড়া বাঁধতে হলে হয়ত তার ভিতর দেদার পাতা পূয়ে দিতে হয়। কিন্তু ছােট গল্প হওয়া উচিত ঠিক একটি ফুলের মত, বর্ণনা ও বক্তৃতার লতাপাতার তার ভিতর স্থান নেই।” -“দেখাে প্রশান্ত, উপমা যুক্তি নয়। যারা উপমা দিয়ে কথা বলে, তাদের কাছ থেকে আমরা বস্তুর কোনও জ্ঞানলাভ করি নে, লাভ করি শুধু উপমারই জ্ঞান। তোমার ঐ ফুল পাতা রাখাে, এখন বল দেখি, ছোট গল্পের প্রাণ কি?” —“ট্রাজেডি।” -কেন কমেডি নয় কেন?