পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩৮ এৰ,১৩৫ -“এই কারণে, যে ট্রাজেডি অল্পক্ষণের মধ্যেই হয়ে যায়—যথা, খুন জখম মৃত্যু ইত্যাদি, আর কমেডির অভিনয় ত সারা জীবন ধরেই হচ্ছে।” অনুকুল এতক্ষণ চুপ করে ছিলেন। এইবার বললেন- —“আমার মত ঠিক উল্টো। জীবনের অধিকাংশ মুহুর্তই হচ্ছে কমিক। কিন্তু সেই মুহূর্ত গুলােকেই এক সঙ্গে ঠিক দিলে তবে বােঝা যায় যে ব্যাপারটা আগাগােড়া ট্রাজিক। পৃথিবীতে যা ছােট তাই কমিক আর যা বড় তাই টাজিক।” “জীবনটা টাজিক কি কমিক এ তর্ক উঠল যে প্রথমে তা কমিক হবে আর শেষটা ট্রাজিক হতেও পারে এ কথা আমি জানতুম। তারপর ঐ ত হচ্ছে সকল দর্শনের আসল সমস্যা। আর কোনও দর্শনই অদ্যাবধি যখন তার মীমাংসা করূতে পারে নি তখন আমরা যে হাত হাত তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত করব, সে ভরসাও আমার ছিল না। আলােচনা, যুদ্ধ থেকে গল্পে এসে পড়ায় একটু হঁপছেড়ে বেঁচে ছিলুম, তাই দর্শনের একটা ঘােতর তর্ক হতে নিষ্কৃতি পাবার জন্য আমি এই বলে উভয় পক্ষের অপােষ মীমাংসা করে দিলুম যে‘টাজি-কমেডিই হচ্ছে ছােট গল্পের প্রাণ। প্রফেসর এতক্ষণ আমাদের তর্কে যােগ দেন নি ; নীরবে একমনে আমাদের কথা শুনছিলেন। অতঃপর তিনি ঈষৎ হাস্য করে বললেন, -“প্রশান্তর কথা যদি ঠিক হয়, তাহলে ছােট গল্প আমারই লেখা উচিত, কেননা আমার মুখে গল্প ছােট হতে বাধ্য। আমার বর্ণনা করবার শক্তি নেই, আর বক্তৃতা করার প্রবৃত্তি নেই। এই ত গেল প্রথম কথা। তারপর জীবনটাকে আমি টাজেডি ও মনে করি নে, কমেডিও মনে করি নে; কারণ আমার মতে সংসারটা হচ্ছে একসঙ্গে ও