পাতা:সমাজ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R - সমাজ চলে যায়, পুত্র বয়ঃপ্রাপ্ত হ’লে পর হয়ে পড়ে । প্রগর জীবিকাংগ্রামে স্ত্রীলোকদেরও একাকিনী যোগ দেওয়া আবশুক হয়েছে । অথচ তাদেব চিরকালের শিক্ষা স্বভাব এবং সমাজনিয়ম তার প্রতিকূলতা কবচে । যুরোপে স্ত্রীলোক পুরুষের সঙ্গে সমান অধিকার প্রাপ্তির যে চেষ্টা কবচে সমাজের এই সমাঞ্জস্তনাশই তার কারণ বলে’ বোধ হয় । মরোয়েদেশীয় প্রসিদ্ধ নাট্যকার ইবসেন-রচিত কতকগুলি সামাজিক নাটকে দেখা যায় নাট্যোক্ত অনেক স্বীলোক প্রচলিত সমাজবন্ধনের প্রতি একান্ত অসহিষ্ণুতা প্রকাশ করচে অথচ পুরুষেরা সমাজপ্রথার অনুকূলে । এই বকম বিপরীত ব্যাপার পড়ে আমার মনে হ’ল, বাস্তবিক, বর্তমান য়ুরোপীয় সমাজে স্ত্রীলোকের অবস্তাই নিতান্ত অসঙ্গত । পুরুষের না তাদের গৃহপ্রতিষ্ঠা করে দেবে, না তাদের কৰ্ম্মক্ষেএে প্রবেশের পূর্ণাধিকার দেবে। বাশিয়ার নাইছিলিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে এত স্ত্রীলোকের সংখ্যা দেখে আপাতত আশ্চর্য্য বোধ হয়। কিন্তু ভেবে দেখলে যুরোপে স্বীলোকের প্রলয়মূৰ্ত্তি ধরবার অনেকটা সময় এসেছে । অতএব সবমৃদ্ধ দেখা যাচ্চে, য়ুরোপীয় সভ্যতায় সৰ্ব্ব বিষয়েই প্রবলতা এমনি অত্যাবগুক হয়ে পড়েছে যে, অসমর্থ পুরুষই বল আর অবলা রমণীষ্ট বল, দুৰ্ব্বলদের আশ্রয় স্থান এ-সমাজে যেন ক্রমশই লোপ হয়ে যাচ্চে। এখন কেবলি কাৰ্য্য চাই, কেবলি শক্তি চাই, কেবলি গতি চাই ; দয়া দেবার এবং দয়া নেবার, ভালবাসবার এবং ভালবাসা পাবার যারা যোগ্য তাদের এখানে যেন সম্পূর্ণ অধিকার নেই। এই জন্তে স্ত্রীলোকেরা যেন তাদের স্ত্রীস্বভাবের জন্তে লজ্জিত। তারা বিধিমতে প্রমাণ করতে চেষ্টা করচে যে, আমাদের কেবল যে হৃদয় আছে তা নয়, আমাদের বলও আছে। অতএব “আমি কি ডরাই সখি