পাতা:সমালোচনা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৪
সমালোচনা।

রেলগাড়িটা চলে নাই, কোন কালে চলিবে বলিয়া ভরসা নাই সেখানে আমি একটু হাওয়া খাইয়া বেড়াইতেছি ইহাতে তোমাদের মহাভারত কি অশুদ্ধ হইল?

 তোমরা ত আবশ্যকবাদী, আবশ্যকের এক ইঞ্চি এদিকে ওদিকে যাওনা। তোমাদেরই আবশ্যকের দোহাই দিয়া তোমাদিগকে জিজ্ঞাস করি, আমি যে অনন্তরাজ্যে বিচরণ করিতেছি, যুক্তির কারাগারে পুরিয়া আমাকে সে রাজ্য হইতে বঞ্চিত করিবার আবশ্যকটা কি? যাহাতে মানুষের সুখ, উন্নতি, উপকার হয়, তাহাইত সকল কার্য্যের উদ্দেশ্য? আমি যে অসীম সুখে মগ্ন হইতেছিলাম, আমার যে প্রাণের অধিকার বাড়িতেছিল, আমার যে প্রেম জগতে ব্যাপ্ত হইয়া পড়িতেছিল, ইহা সংক্ষেপ করিয়া দিয়া তোমাদের কি প্রয়োজন সাধন করিলে? মনুয্যের কি উপকার করিলে, কি সুখ বাড়াইলে? মানুষের সুখের আশা, কল্পনার অধিকার এতটাই যদি হ্রাস হয়, তবে তোমার এই মহামূল্য যুক্তিটা কিছুক্ষণের জন্য শিকায় তোলা থাকনা কেন?

 যুক্তির মানে কি? যোজনা করা ত? একটার সঙ্গে আর একটার যোগ করা। পতনের সঙ্গে হাত পা ভাঙ্গার যোগ আছে, সুতরাং পতনের পর হাত পা ভাঙা যুক্তিসিদ্ধ। চুপ করিয়া বসিয়া থাকিলে যে হাত পা ভাঙ্গিবে, ইহা যুক্তিসিদ্ধ নহে, কারণ, এই কার্য্যকারণের মধ্যে একটা যোগ পাওয়া যায় না। কিন্তু একটু ভাবিলেই দেখা যায়, আমরা কেবল কতকগুলি ঘটনাই দেখিতে বা জানিতে পাই, কোন কার্য্যকারণের যোগ আমাদের চোখে পড়ে! ঈশ্বর নামক সূক্ষ্ম