পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ রায়বাহাদুরের গিনী বলিল, “তুমি চুপ কর বৌম, সব কথার তোমার কথা কওয়া কেন ? তুই ক'টাক মাইনে পাস রে মনোহর ?” মনোহর বলিল, “আক্তে, পনের টাকা ।” রায়বাহাদুরের গিনী বলিল, “ও বাবা ! সাত আট টাকা মাইনে দিলে কত গগু গণ্ডা মালী পাওয়া যায়-পনের টাকা ।” বৌটি ফিসফিস করিয়া বলিল, “খেতে পরতে তো দেয় না।” রায়বাহাদুরের গিল্পী বলিল, “আঃ, তুমি চুপ কর না বৌমা !-তুই কি চাস ?” মনোহর বলিল, “আম্ভেজ্ঞ এমনি দেখা করতে এসেছি।” রায়বাহাদুরের গিনী বলিল, “তা বেশ করেছিস । তা দ্ব্যাখ, সাত্ত টাকায় যদি থাকিস তো তোকে রাখতে পারি। এক বেলা খাওয়া পাবি ! থাকিবি ? মনোহর চিন্তা করিল না, কারণ চিন্তা করিবার ক্ষমতা তার ছিল না। প্ৰত্যেকটি নিশ্বাসে গন্ধের প্রতীক হইয়া তার অতীত জীবন তার মধ্যে প্ৰবেশ করিতেছে, তার সমস্ত মানসিক শক্তি আত্মসমৰ্পণ করিয়াছে এই একটিমাত্র গন্ধরূপী মোহের প্রভাবে। চোখ বুজিয়া মনোহর বলিল, “আন্দ্ৰে, থাকব ।” রায়বাহাদুরের গিল্পী বলিল, “আচ্ছা, কাল থেকে আসিস তা হ’লে । বিলাতি ফুলগাছ আনিস কিন্তু-যটা পারিস।” বৌটি ফিসফিস করিয়া বলিল, “কাল কাজ ছেড়ে এলে তো এমাসের মাইনে পাবে না।” রায়বাহাদুরের গিল্পী বলিল, “বোমা ! চুপ কর। কাল সকাল থেকে আসবি তো ?” মনোহর বলিল, ‘আসব।” SNES