পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ খাইবে আর এত খাটিয়া তার ছেলের যথেষ্ট দুধ জুটবে না ? যে ছেলে একদিন-- সেইখানে দাড়াইয়া মায়া হয়তো ছেলের ভবিষ্যতের এবং সেই সঙ্গে জড়ানো নিজের ও নিজের এই সংসাবের ভবিষ্যতের স্বপ্নে কিছুক্ষণের জন্য বিভোর হইয়া থাকিত, গোঙানির মত আওয়াজ করিয়া বিমল পাশ ফেরায় স্বপ্ন দেখা তখনকার মত স্থগিত রাখিতে হইল । কাল যে ইংরাজী নভেলটি পড়িতে পড়িতে বিমল ঘুমাইয়া পড়িয়াছিল, ঠিক পিঠের নীচে সেই বইখানাই অনেকক্ষণ তার ঘুম ভাঙ্গানোর চেষ্টা করিতেছিল। মায়া ডাকিতেই সে জাগিয়া গেল । বাজার ? চা-টা খাইয়া একবার বাজার যাইতে হইবে ? মস্ত একটা হাই তুলিয়া মাথা নাড়িয়া বিমল বলিল, “আমি পারব না।” মায়া তা জানে । বিমল কোনদিন বাজারে যায় না, বাজারে গেলে তার বিশ্ৰী লাগে, কেমন যেন লাগে, বড় খারাপ লাগে। তবু মায়া আরেকবার চেষ্টা করিয়া দেখিল, “কাকে পাঠাব। তবে ? আজকের মত একবারটি যা লক্ষ্মী, উনি আপিসের কাজ নিয়ে বসেছেন। নইলে-” বিমল আবার মাথা নাড়িল, “উহু, বাজার-টাজার আমার দ্বারা হবে না। মা । বলতে দশবার গিয়ে দোকান থেকে জিনিষ। এনে দিচ্ছি, বাজারে ঢুকে মাছ তরকারী কিনতে পারবো না।” মায়া ফিরিয়া গেল। তাই হোক, কোনদিন যেন ছেলেকে তার নিজে বাজার করিতে যাইতে না হয়, শুধু বাজার করার জন্যই যেন মাহিনী দিয়া লোক রাখিবার ক্ষমতা তার হয়। আচ্ছা, তার ভাসুর কেন বাজার যায় না ? অন্তত আজকের মত কেন যাইবে না ? আপিম খায় বলিয়া ? এতো উচিত কথা নয় ! আগে যখন বড় চাকরী করিত, তখনকার কথা আলাদা, তখন কিছু So