পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ কিছুক্ষণ পায়ে হঁটিয়া বেড়ানোর পর বিকাশ হঠাৎ বলে, “চল, এবার ফিরি।” ততক্ষণে রাণীর মন আবার বিষাদ ও বিরক্তিতে ভরিরা গিয়াছে। গাড়ী যখন বাড়ীর দিকে ফিরিয়া চলিল তার তখন মনে হইতেছে, সে বুঝি কয়েক রাত্রি ঘুমায় নাই। রোগশয্যাপার্শ্বে চার পাঁচ রাত্রি জাগিব।ার পর বাপের মৃত্যুর সময় নিজেকে তার এই রকম অবসন্ন, নিস্তেজ আর প্রাণহীন মনে হইতেছিল । সব চুকিয়া গিয়াছে। আজ যখন বিকাশ কিছু বলিল না, কোনদিন আর তার কাছে কিছু শুনিবার ভরসা রাণীর নাই। রাস্তার আলোতে বিকাশ কি তার চোখ দেখিয়া আগেই কিছু টেরা পাইয়াছিল ? তাই সে আজ এমন গম্ভীর, চিন্তামগ্ন ? কি করিবে স্থির করিবার জন্য গঙ্গার ধারে আসিয়াছিল, এতক্ষণে মন ঠিক করিয়া বাড়ী ফিরিয়া চলিয়াছে ? বাড়ী পৌছিয়া রাণী ভদ্রতা করিয়া বলে “বসবেন না ?” বিকাশ বলে “বসব ? না, আর বসব না ।” বাণী শ্ৰান্তকণ্ঠে বলে, “আচ্ছা ।” বিকাশ। কিন্তু যায় না, দাড়াইয়া থাকে। তার আপত্তি যেন শুধু বসিতে, দাড়াইয়া থাকিতে অনিচ্ছা নাই। খানিকক্ষণ চুপচাপ দাড়াইয়া থাকিয় সে হঠাৎ বলে, “আচ্ছা, একটু বসি, জল খেয়ে যাই এক গ্লাস।” রাণী তার মনের ভাব অনুমান করিয়া একেবারে হতাশ হইয়া যায়। একটু মায়া হইতেছে বিকাশের। এতকাল যাকে জীবনসঙ্গিনী করার কথাটা মনে মনে নাড়াচাড়া করিয়া আসিয়াছে, আজি গোল গোল কুৎসিৎ চোখ দেখিয়া তাকে একেবারে ত্যাগ করিবার মতলব ঠিক করিয়া একটু খুঁত খুঁত করিতেছে মনটা, একটু অস্বস্তি বোধ হইতেছে। কিন্তু এরকম দয়া করা কেন ? একটু বসিয়া এক Գ8