পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

@8 সরল বেদান্ত দর্শন । ইহারা সমাধির অন্তরায়। কোন একটী অন্তরায় দ্বারা চিত্ত বিক্ষিপ্ত হইলে যোগীর আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক ও আঁধিদৈবিক হুঃখ, মনের সাচ্ছন্দ্যরাহিত্য, অঙ্গ কম্পন এবং অসংযত শ্বাস প্রশ্বাস হইয়া থাকে। সমস্ত চিত্তবৃত্তি নিরোধের নাম যোগ। যোগানুষ্ঠান কালে ছিদ্র (অবকাশ) পাইলেই নিরুদ্ধ চিত্তবৃত্তি সকল প্রাচুভূত হয়। অভ্যাস ও বৈরাগ্য দ্বারা চিত্তবৃত্তি নিরোধ করা যায়। শাস্ত্রোক্ত যোগাঙ্গানুষ্ঠান পূৰ্ব্বক চিত্তবৃত্তি নিরোধের নিমিত্ত পুনঃ পুনঃ যত্ন করার নাম অভ্যাস । দীর্ঘকাল নিরস্তর আগ্রহাতিশয় সহকারে চেষ্টা করিলে অভ্যাস সফল হয়। ইহলোকে দৃষ্ট ও শাস্ত্রাদিতে কথিত সমস্ত বিষয়ে তৃষ্ণ পরিত্যাগ পূর্বক ইন্দ্রিয়গণ ও মনকে সম্পূর্ণরূপে বশীভূত করার নাম বৈরাগ্য। চিত্তবৃত্তি সকল নিরোধ করিতে পারিলে যোগী স্বরূপ বা আত্মভাবে অবস্থান করেন। চিত্ত হইতে আত্মা বিভিন্ন এই জ্ঞান মুস্থির হইলে আমি কৰ্ত্তা, আমি ভোক্তা ইত্যাদি জ্ঞান তিরোহিত হয়। আমি কৰ্ত্ত, আমি ভোক্তা এইরূপ জ্ঞান তিরোহিত হইলে প্রকৃতি মায়াময় ও অসৎ বলিয়া দৃষ্ট হয়। তখন জীব মুক্ত হইয়া কৈবল্য প্রাপ্ত হন এবং কেবল মাত্র আত্মা বা চিচ্ছক্তিরূপে অবস্থান করেন । ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণ গীতাতে বলিয়াছেন হে মহাবাহো ! চঞ্চলস্বভাব মনকে নিগ্ৰহ করা অতি কঠিন সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। কিন্তু অভ্যাস ও বৈরাগ্য দ্বারা মনকে বশ করা যায়। আমার মত এই যে অসংযতচিত্ত ব্যক্তির পক্ষে যোগ দুষ্পাপ্য। কিন্তু সংযতচিত্ত সাধক শাস্ত্র প্রদর্শিত উপায় অবলম্বন পূর্বক যত্ন করিলে যোগ পাইতে সমর্থ হন। কাম, ক্রোধ ও লোভ এই তিনটী পুরুষাৰ্থ বিনাশক এবং নরকের দ্বার স্বরূপ। সুতরাং মুমুকু ব্যক্তি এই তিনটীকে পরিত্যাগ করিবেন। হে কেন্তেয় ! দুঃখ মোহাত্মক নরকের এই তিন দ্বার হইতে বিমুক্ত হইলে মানবগণ আপনার শ্রেয়ঃ আচরণ করেন এবং তদ্বারা ক্রমশঃ মোক্ষপ্রাপ্ত হন । ষে ব্যক্তি শাস্ত্রৰিধি (অর্থাৎ বেদোক্ত ৰিধান সকল ) পরিত্যাগ