পাতা:সরস গল্প - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতিভূষণ ; সরস গল্প হরিদাসবাবু সকাল দশটার আগেই ভাতে ভাত খাইয়া গিয়া পুলের তলায় বসিলেন। মুশকিল। এই যে, বিড়ি ফুরাইয়াছে। নগদ পয়সার অভাব। যে কয়টি খুচরা আনি দুয়ানি পকেটে ছিল, স্ত্রীকে দিয়া অ্যাসিতে হইয়াছে । যাক গে। আশাতে আসক্তির বন্ধন । সর্ব-বন্ধন-মুক্ত না। তিনি । তিনি না আজব, অমর আত্মা ? বিড়ি না। টানিলে কি হয় ? বিড়ি ছাড়িয়া দিলেন। অনেকক্ষণ বসিয়া গীতার ভাষ্য পড়িলেন। কৃষ্ণানন্দ স্বামীর এই ভাষ্যখানি সম্প্রতি পাড়ার রামতারণ মুখুয্যের কাছে চাহিয়া লইয়াছেন । বুড়ে রামতারণ ঘুঘু লোক, সুদখোর মহাজন, গীতার মহিমা সে কি বুঝিবে ? টাকার আণ্ডিল, একটা পয়সার সদ্ব্যয় নাই। গীতা অত সহজ জিনিস নয়। আর একদিন এভাবে কাটিল । তাগাদার চোটে পথে ঘাটে বাহির হওয়ার জো নাই । বাড়াতেও তিষ্ঠিবার জো নাই। গত মাসের মাহিনী দিবার সময় উত্তীর্ণ হইয়াছে স্কুলের, হরিদাসবাবু হিসাব করিয়া দেখিলেন, আজ ইংরাজি মাসের এগারো তারিখ । চার তারিখে মাহিনী হওয়ার দিন। এদিকে আর চলে না । একরাশ দেন, দুধওয়ালী দুধ বন্ধ করিবে কাল হইতে । বাড়ীতে গৃহিণী বলিলেন-হঁ্যাগ, আর তো চলে না । এবার কি তোমাদের মাইনে হবে না ? এত দেরি করচে কেন এবার ? আঞ্জ ইস্কুলে গিয়ে ভালো ক’রে বলে পোড়ারমুখো হেডমাস্টারকে । তেরোদিন অনুপস্থিতির পর হরিদাসবাবু আজ স্কুলে গিয়া গুটি গুটি হাজির হইলেন । তখনও ঘণ্টা পড়ে নাই। হরিদাসবাবুর পা কঁাপিতেছে। জিহু শুকাইয়া গিয়াছে। এতদিন কামাই করিবার কি কৈফিয়ৎ দিবেন। বড় কড়া হেডমাস্টার । হেডমাস্টারের অফিসে কম্পিত পদে দুরু-দুরু বক্ষে ঢুকিতেই হেড > R