পাতা:সর্ব্ববেদান্ত-সিদ্ধান্ত-সার-সংগ্রহঃ.djvu/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ه/ها এখন জিজ্ঞাস্য হইতে পারে,—বেদোক্ত সাধনেই যে মুক্তি হইবে, তাহার প্রমাণ কি ? বেদের এত প্রামাণ্য কিসের জন্ত ? এতদ্ভুত্তরে বলিতে পারা যায় ત বেদ অপৌরুষেয় । বেদ মন্বাদি স্মৃতির ন্যায় মনুষ্যকৃত নহে। “অস্ত মহতো ভূতস্ত নিঃশ্বসিতমেতাযদৃগবেদযজুৰ্ব্বেদসামবেদ” ইত্যাদি প্রতিদ্বারা বেদ ঈশ্বরপ্রণীত বলিয়া অবগত হওয়া যায়। এইরূপ উৎপত্তিশ্রুতি থাকায়, বেদ ঈশ্বরের ন্যায় কুটস্থ নিত্য নহে, কিন্তু এককল্পস্থায়ী ; নৈয়ায়িকের স্তায় বেদান্তমতে শব্দের তৃতীয়ক্ষণে নাশ স্বীকার করা যায় না। সৃষ্টির প্রথমে বেদ ব্ৰহ্ম হইতে উৎপন্ন হইয়া প্রলয়কালে তাহাতেই লয় প্রাপ্ত হয়, পুনরায় ঈশ্বর গতকল্পীয় বেদ হিরণ্যগৰ্ভকে উপদেশ দেন ; তিনি আবার মরীচি প্রভৃতি ঋষিগণকে উপদেশ দিয়া থাকেন ; এইরূপে পুনরায় বেদ সম্প্রদায়ক্রমে প্রচার লাভ করে। যদ্যপি বেদ ঈশ্বর হইতে উৎপন্ন হইয়াছে, তথাপি বেদে ঈশ্বরের স্বতন্ত্রতা নাই ; কালিদাস প্রভৃতির গ্রন্থে যেরূপ কালিদাসাদির স্বাতন্ত্র্য আছে, বেদে ঈশ্বরের সেরূপ নাই। ঈশ্বর গত কল্পে যেরূপ আমুপূর্বক বেদ রচনা করিয়াছিলেন, একল্পেও তদ্রুপ রচনা করিয়াছেন । যদি তাহার বেদে স্বাতন্ত্রা থাকিত, তাহা হইলে তিনি যেমন আমুপূৰ্ব্বীর অন্যথা করিতে পারেন, সেইরূপ অর্থেরও অন্যথা করিতে পারেন। একল্পে অগ্নিহোত্র যাগে স্বর্গ হয়, ব্ৰহ্মহননে নরক হয় ; ঈশ্বরের বেদে স্বতন্ত্রত থাকিলে কল্পান্তরে তাহার বিপরীত হইতে পারে,—অর্থাৎ অগ্নিহোত্র দ্বারা নরক এবং ব্ৰহ্মহত্য দ্বারা স্বৰ্গও হইতে পারে। তজ্জন্ত মনীষিগণ বেদে ঈশ্বরের স্বতন্ত্রতা স্বীকার করেন না। ভগবান কুমারিলভট্টও স্বপ্রণীত শ্লোকবাৰ্ত্তিকে স্পষ্টভাবে এই কথা ৰলিয়াছেন,—“যত্নতঃ প্রতিষেধ্যা নঃ পুরুষাণাং স্বতন্ত্রতা”—অর্থাৎ পুরুষগণের স্বতন্ত্রতাই আমরা যত্নসহকারে নিষেধ করিয়া থাকি। পৌরুষেয় শব্দের অর্থ— পুরুষনিৰ্ম্মিত ; অপৌরুষেয় তাহার বিপরীত,—এরূপ অর্থ গ্রহণ করা যাইতে পারে না। কারণ বেদও ঈশ্বররুপ পুরুষনিৰ্ম্মিত। সুতরাং এখানে পৌরুষেয় শব্দের অর্থ—পুরুষ-স্বাতন্ত্র্য ; তদরাহিত্য অপৌরুষেয়ত্ব এইরূপ পারিভাষিক লক্ষণ স্বীকার করিতে হইবে। বেদের অপৌরুষেয়ত্ব নিরূপিত হইলে, তদন্তৰ্গত বেদান্তের অপৌরুষেয়ত্বে আর সন্দেহ নাই। - বেদের স্বতঃপ্রামাণ্য । বৈদের অপৌরুষেয়ত্ব নিরূপিত হইলেও, বেদ স্বতঃপ্রমাণ কিংবা পরতঃপ্রমাণ । এরূপ আশঙ্কা উপস্থিত হইতে পারে। হাকিকগণঃবক্ত্যাথার্থজ্ঞানকেই গ্রামাণ্য