পাতা:সর্ব্ববেদান্ত-সিদ্ধান্ত-সার-সংগ্রহঃ.djvu/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা। এতদিনে ভগবৎপাদ শ্ৰীমচ্ছঙ্করাচার্য্য-বিরচিত 'সৰ্ব্ববেদান্ত সিদ্ধান্ত-সারসংগ্ৰহ? নামক একখানি অতি উপাদেয় গ্রন্থ বঙ্গভাষায় প্রকাশিত হইল। ইতঃপূৰ্ব্বে এই গ্রন্থ বঙ্গদেশে প্রচারিত হয় নাই । যাহারা ভগবৎপাদের অন্তান্ত গ্রন্থ পাঠ করিয়া পরিতৃপ্ত হইয়াছেন, এই গ্রন্থখানি তাহদের অধিকতর প্রতি সম্পাদন করিবে, সন্দেহ নাই। কারণ, এই গ্রন্থখানিতে বেদান্তশাস্ত্রের যাবতীয় বিষয় সহজভাবে বর্ণিত হইয়াছে। যাহারা নিরন্তর তাপত্রয়পরীত সংসার হইতে মুক্তিলাভ করিতে চান, যাহারাজুর, মৃত্যু প্রভৃতির হস্ত হইতে পরিত্রাণ পাইতে ইচ্ছা করেন, তাহাদের একমাত্র উপনিষদের (বেদান্তের ) শরণাপন্ন হওয়া উচিত ; কিন্তু উপনিষৎ অতি দুৰ্ব্বোধ, স্বল্পধী ব্যক্তির সহজে বোধগম্য হয় না ; এইজন্য ভগবান শঙ্করাচার্য্য কৃপাপরবশ হইয়া এই গ্রন্থে সমগ্ৰ উপনিষদের তাৎ পর্য্য সংগ্ৰহ করিয়াছেন। এই বিশাল ব্ৰহ্মাণ্ডে জীবকুল ব্যাকুল হইয়া ঘটধন্ত্রের ন্যায় অহরহ দেব, মানব, তিৰ্য্যক্ প্রভৃতি বিবিধ যোনিতে পরিভ্রমণ করিতেছে। শরীর ধারণ করিলে, আধ্যাত্মিক, আধিদৈবিক ও আধিভৌতিক-রূপ ত্ৰিবিধ তাপের হস্ত হইতে পরিত্রাণ পাইবার উপায় না । কৃমি কীট হইতে আরম্ভ করিয়া হিরণ্যগৰ্ভ পৰ্য্যন্ত মুখদুঃখ তরতমভাবে বিদ্যমান আছে। এই তাপত্ৰয়ের দ্বারা জীবনিৰহ পুনঃপুনঃ তাপিত হইয়া, তাহার নিবৃত্তির জন্ত নানাবিধ উপায় অন্বেষণ করিয়া থাকে ; কিন্তু মোহান্ধজীব দুঃখনিবৃত্তি কিংবা মুখপ্রাপ্তির বাস্তবিক সাধন কি তাহা জানিতে না পারিয়া, স্ৰকৃ, চন্দন, বনিত, মিষ্টান্ন প্রভৃতি বিষয় দ্বার দুঃখনিবৃত্তি ও মুখলাভ করিবার চেষ্টা করিয়া থাকে। কিন্তু এই সমস্ত বিষয় দুঃখ নিবৃত্তি কিংবা মুখপ্রাপ্তির হেতু নহে ; বরং ইহার নানাবিধ দুঃখের নিদান হইয়া থাকে। এইজন্ত পুরুষধেীরেয়গণ বিষয়সস্তৃত মুখকে অৰজ্ঞা করিয়া, অথও অপরিচ্ছিন্ন মুখলাভের জন্ত শাস্ত্রীয় সাধন অবলম্বন করিয়া থাকেন ; কারণ, শাস্ত্রীয় সাধনই দুঃখনিবৃত্তি ও মুখপ্রাপ্তির একমাত্র উপায়। এক্ষণে দেখা যাউক, শাস্ত্র কি এবং সাধনই বা কাহাকে বলে। কারণ, ইহা জানিতে না পারিলে, কোন ব্যক্তি ইহার আশ্রয় গ্রহণ করিতে সমর্থ হয় না ; এই নিমিত্ত প্রথমেই শাস্ত্রের পরিচয় দেওয়া কৰ্ত্তব্য বলিয়া বিবেচিত হইতেছে।