পাতা:সহরতলি (দ্বিতীয় পর্ব্ব) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনহৱতাৰ্লী যশোদার প্রশংসা করিয়া বলে যে, বাস্তবিক, বয়স না হইলে কি এসব কথা মানুষের মাথায় আসে । কিন্তু একটা বিষয় আপত্তি করে সুব্রতা, সকাল সন্ধ্যায় চা-জলখাবার সম্বন্ধে । “চ’টা কিন্তু শুমামি করব দিদি ৷” “নিজের হাতে কবে? খাওয়াতে চাও, না ? বলিয়া যশোদা হাসে । সুব্রতার সঙ্গে এমনিভাবে আলাপ করে যশোদা, কখনও মা মাসীর মত, কখনও সমবয়সী সখির মত । কিছুক্ষণ আলাপ করিবার পরেই সব গোলমাল হই য়া যায়, সুব্রতার কথা শুনিতে শুনিতে সমবয়সী। বন্ধু মনে হয় তাকে, আব্ব মুখের দিকে চাহিয়া দেখিলে খেয়াল হয় যে সে ষোলবছরের একটা কচি মেয়ে মাত্র, যে বয়সের মেয়ে যশোদারও থাকিতে পারিতি । এরা যে তার ভাড়াটে একথা যশোদার মনেই থাকিতে চায় না । দু’জনকে তার মনে হয় অতিথি, তার বাড়ীতে বেড়াইতে আসিয়াছে ; এদের খাওয়া-দাওয়ার ভাল ব্যবস্থা করা আর সুখ-সুবিধার দিকে নজর রাখার দায়িত্ব যেন তার । পরদিন সকালে উনুনে আঁচ দিয়া যশোদা সুব্রতাকে ডাকিতে যায়। এ সময় রোজ সুব্রত রান্নাঘরে উপস্থিত থাকে, আজ তাকে না দেখিয়া যশোদা একটু আশ্চৰ্য্য হইয়া গিয়াছিল। ঘরে গিয়া যশোদা দ্যাখে কি, অজিত ছোট টুলটিতে মুখ ভার করিয়া বসিয়া আছে, চৌকিতে সতরঞ্চির উপর উপুড় হইয়া গুটানো তোষকে মুখ গুজিয়া সুব্রত কঁাদিতেছে। “কি হ’ল সকাল বেলা তোমাদের ?” ܒܓ