পাতা:সহরতলি (দ্বিতীয় পর্ব্ব) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনহরতলী ক্রুদ্ধ আহত মনে যামিনীর বিনয়ে একটু শান্তি বোধ হয়। নিজের মেয়ের চেয়ে পরের ছেলেই ভাল। শ্বেত পাথরের মেঝেতেই দু’জনে বসিয়াছিল, যামিনী ঘাড় নীচু করিয়া উসখুসি করিতে থাকে। কি যেন বলিতে চায় কিন্তু বলিতে পারে না ।

  • কবে যেতে হবে ?”

‘কালকেই রওনা হয়ে যাও। নিয়মমত ওষুধপত্র খেয়ো । কবরেজ মশায়কে বলে’ দেব, ডাকে ওষুধ পাঠিয়ে দেবেন। আর সকাল-সন্ধ্যায় একটু যে যোগাভ্যাস শিখিয়ে দিয়েছি— আমার কিছু টাকার দরকার ছিল।” সত্যপ্রিয় হঠাৎ চুপ করিয়া যায়। কতগুলি বিষয়ে বুদ্ধিটা খুবই ধারালো, হঠাৎ তার মনে হয় জামায়ের সম্বন্ধে একটা নূতন তথ্য যেন আবিষ্কার করিয়া বসিয়াছে । “কত টাকা ?” “পাচিশো ।” খুব লজ্জার সঙ্গে ভয়ে-ভয়েই যামিনী টাকার আবেদন জানাইয়াছে, তবু সত্যপ্ৰিয়ের মনে হয় মাঝে মাঝে দু’একজন তাকে ফাঁদে ফেলিয়া যেভাবে টাকা আদায় করিবার চেষ্টা করে, যামিনীর টাকার দাবীটা যেন কতকটা সেই ধরণের। আপিসে নামমাত্র কাজের জন্য হাতখরচ বাবদ যামিনীকে মাসে মাসে দু’শ টাকা দেওয়া হয়। খরচ তার কি যে দুশো টাকাতেও কুলায় না ? গম্ভীর হইয়া সত্যপ্রিয় একটু ভাবে, তারপর চেক বই বাহির করিয়া পাচশো টাকার একটা চেক লিখিয়া দেয়। সারাটা দিন তার কেবলি মনে হইতে থাকে, চঞ্চলভাবে ছাটাছুটি 68