পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, প্রথম ভাগ).djvu/২০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

,8@端、 সাধন । ধেনু নন্দিনীর সেবার কথা পাঠ কর। সেই অনিন্দ্যতনু ধেনুর নবকিসলয়সদৃশ চিন্ধন পাটল বর্ণ ও ললাটতটে প্রদোষসময়ের নবেদিত শশিকলাসদৃশ ঈষৎ বক্র শ্বেত রেখা বর্ণনা করিয়া কবি কত আনন্দলাভ করিয়াছেন । রাজা যখন রথারোহুণে গুরুগৃহে অথবা মৃগয়ায় বাহির হন, কালিদাস সমস্ত পথ তাহার অশ্বের নিভৃতোদ্ধ কর্ণ নিষ্কম্পচামরশিখা গতিবেগসৌন্দৰ্য্য দেখিতে দেখিতে চলেন ; এবং কি বশিষ্ঠাশ্রমে, কি মালিনীনদীতীরে, রথ হইতে অবতরণকালে রাজমুখে অশ্বদিগকে বিশ্রাম করাইবার আদেশ দিতে কখনও ভুলেন না। - - এই সহানুভূতি শকুন্তলার বিদায়দৃশ্রে—যেখানে হরিণশিশু বারবার অঞ্চল ধরিয়া টানিয়া গমনোদ্যত শকুন্তলাকে ধরিয়া রাখিতে চাহে এবং হরিণশিশুর স্নেহে শকুন্তলার নয়ন ছলছল করিয়া আসে—সেইখানেই সম্যক্ মনোহারী হইয়া উঠিয়াছে। নিপুণ চিত্রকর কালিদাস এইরূপে চতুর্দিকের সুন্দর প্রকৃতির মধ্যস্থলে মানবের সহিত মৃগহৃদয়ের তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে বাধিয়া দিয়া যে এক কবিহৃদয়ের অনেকখানি বেদনা, পশুজগতের প্রতি অনেক খানি সহানুভূতি যেন আপন হইতে নিঃশব্দে সঞ্চারিত হইয়া গিয়াছে। - ভবভূতির নাটকেও এ দৃষ্টাস্তের অসদ্ভাব নাই। উত্তরচরিতের তৃতীয় অঙ্কে সীতার পালিত করিশিশু ও ময়ূরবর্ণনায় এই অনুরাগ অতি সুন্দর রূপে ব্যক্ত হইয়াছে। এবং সেই সঙ্গে প্রকৃতি, পও এবং মানবের সম্মিলনে সংস্কৃত কবির হৃদয় কিরূপ উচ্ছসিত झ्ङे । উঠে তাহাও প্রকাশ পাইয়াছে —শকুন্তলার চতুর্থ অন্ধেৱ সহিত উত্তরচরিতের তৃতীয় অঙ্ক, বিদায় এবং পুনর্মিলন দুই সম্পূর্ণ दिङित्र বিষয়ক হইলেও, দৃষ্ঠাংশে নিতান্ত বিসদৃশ নহে। এবং ভাবের ঐক্যে উভয় নাটকের পাত্রপাত্রীগণও যেন এইখানে কতকটা ঘনিষ্ঠ হইয়া আসে। । - - পশুমেহ ভারতবুর্ষায় প্রকৃতির যে এক প্রধান লক্ষণ তাহা । একটি কাহিনীতে সুন্দর ব্যক্ত হইয়াছে। ব্যাধ যখন ক্ৰৌঞ্চমিথুনের মধ্যে একটিকে বধ করিল তখনই বাল্মীকির মুখে ছন্দোবদ্ধ শ্লোক উচ্চারিত হইল। যুদ্ধ নহে, স্ত্রীপুরুষের প্রেম নহে, জীবে । দয়াই ভারতবর্ষে প্রথম শ্লোক উৎপত্তির কারণ। কথাটা ঐতি- । হাসিক সত্য না হইতে পারে, বাল্মীকির পূৰ্ব্বেও দেবস্তুতি উপলক্ষ্যে । অনুষ্টুপ ছন্দ রচিত হইতে পারে, কিন্তু গল্পটির মধ্যে একটি গভীর সত্য নিহিত আছে। সেটি এই যে, সৰ্ব্বভূতে দয়া ভারতীয় প্রকৃতির মূল উৎস। সামান্ত একটি ক্ৰৌঞ্চপক্ষীহনন পবিত্র শ্লোকস্থষ্টির আদি । - কারণ বলিয়া যে দেশে প্রচলিত হইতে পারে, সে দেশের হৃদয়ের । কথাটি কি তাহ আর বুঝিতে বাকি থাকে না। এই জন্ত “ম নিষাদ প্রতিষ্ঠাং ত্বমগমঃ শাশ্বতাঃ সমাঃ। । যৎ ক্ৰৌঞ্চমিথুনাদেকমবধীঃ কামমোহিতং ॥” । এ শ্লোকটি পবিত্র শ্লোক। না–ব্যাধ কখনই মুক্তিলাভ করিতে । পরিবে না, ভারতে সে চিরকাল অভিশপ্ত হইয়া রহিয়াছে। যে । একটা পাখীর দুঃখ বুঝিতে পারে না, কামমোহিত বিহঙ্গকে যে । অকাতরে হত্যা করিতে পারে, যাহার চিত্তবৃত্তি এতই অসাড় অচেতন, সে কখনই শাশ্বতী গতি প্রাপ্ত হইতে পারে না— । ইহার মধ্যে বড় একটি গভীর কথা আছে।-দুৰ্ব্বলের । "ত দেহ, অসহায়ের প্রতি সহানুভূতি পৃথিবীতে বড় কম। কিন্তু । খিানে ইহা দেখা যায় সেখানে মৰ্ত্ত স্বৰ্গ হইয় উঠে, সেখান । তি কুৎসিৎ অত্যাচার চিরদিনের মত নিৰ্ব্বাসিত হয় এবং সেখানে । পশুপ্রীতি ৪ ৫৭ :