পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, প্রথম ভাগ).djvu/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুড়িয়া যায় ; সেই দিন হইতে সমুদ্রের উৎপত্তি। আর এক্ষণে উদজানের অবশিষ্ট পুড়িতে নাই ; সে আশঙ্কাও নাই। উদজান ভিন্ন অন্ত পদার্থও এত পরিমাণে বর্তমান নাই, যাহা হঠাৎ জলিয়া উঠিয়া একটা প্রলয় ব্যাপার ঘটাইতে পারে। দহনাদি রাসায়ণিক ক্রিয় ভূমণ্ডলে এখনও না চলিতেছে এমন নহে, তবে তাহা এত ধীরে সুস্থে সম্পন্ন হইতেছে যে, তাহাতে বিশেষ আশঙ্কা নাই, তবে ভূমিকম্পরূপে বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুদগমরূপে প্রাদেশিক উৎপাত সময়ে সময়ে ঘটায় বটে। হুগিন্স যে নক্ষত্র জলিয়া উঠা দেখিয়াছিলেন, সেইরূপ ঘটনা আরও কয়েকবার দেখা গিয়াছে। এই গতবৎসরই উত্তরাকাশে অরিগা নামক নক্ষত্রপুঞ্জের সমীপে একটি অদৃষ্টপূৰ্ব্ব নক্ষত্র কিছু দিন ধরিয়া দীপ্তি সহকারে জলিয়া নিবিয়া গিয়াছে। এই আকস্মিক দীপ্তির কারণ নির্ণীত হইয়াছে ঠিক বলা যায় না। সৰ্ব্বত্রই যে আভ্যন্তরীণ কারণে নক্ষত্ৰ জলিয়া উঠে এমন না হইতে পারে। বাহা বস্তুর আঘাত অর্থাৎ নক্ষত্রে নক্ষত্রে সংঘর্ষ ঘটিয়া অগ্ন্যুদগম অসম্ভব নহে। বৃহস্পতি ও শনিগ্রহের মধ্যে ব্যবধান এত অধিক যে, এই দুইএর কক্ষপথের মধ্যে অন্ত কোন গ্রহ থাকিতে পারে অনেক দিন ধরিয়া জ্যোতিষীরা সন্দেহ করিতেন। অলবার্স সাহেবের অন্নসন্ধান ফলে উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম বৎসরেই সেই প্রদেশে, অর্থাৎ বৃহস্পতির ও শনৈশ্চরের কক্ষপথের অভ্যন্তরে নুতন গ্ৰহ আবিষ্কৃত হয়। একটা বড় গ্রহের পরিবর্তে পরস্পর সন্নিকৃষ্ট কতকগুলি ক্ষুদ্র গ্রহ আবিষ্কৃত হয়। একটি একটি করিয়া আজি পৰ্য্যন্ত প্রায় তিনশত ক্ষুদ্র গ্রহ ঐ প্রদেশে আবিষ্কৃত হইয়াছে। অনেকে অন্ত্র মান করেন, পূৰ্ব্বে ঐখানে বৃহস্পতি গ্ৰহাদির সমকক্ষ, একটা বৃহদায়তন গ্রহ বর্তমান ছিল। কোন কারণে সেই বৃহৎ গ্রহটি ভাঙ্গিয়া গিয়া শতখণ্ডে বিভক্ত এতগুলি ক্ষুদ্র গ্রহে পরিণত হই । য়াছে। স্বয়ং অলবার্স সাহেবের এই বিশ্বাস ছিল ; এবং এই বিশ্বাসের অনুবৰ্ত্তী হইয়াই তিনি অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হয়েন। नि তাহাই ঠিক হয়, তবে আমাদের নিকটেই প্রলয়ব্যাপারের স্বচন । - পাওয়া যাইতেছে । * - w দেখা যাইতেছে কোন বাহ্য অনিৰ্দেশ্য অচিন্তিতপূৰ্ব্ব কারণে অলক্ষিতপূৰ্ব্ব গ্ৰহাদির সংঘর্ষে পৃথিবী যে হঠাৎ চুর্ণ হইতে পারে না, তাহা কোন জ্যোতিষী সাহস করিয়া বলিতে পারেন না। । হঠাৎ ফাটিয়া শত খণ্ড হইতে পারে কি না। ভূমণ্ডলের অন্তর্ভাগ । এখনও বিষম তপ্ত অবস্থায় রহিয়াছে। এত তপ্ত যে, পৃথিবীর । অভ্যন্তর গলিত, দ্রব অবস্থাপন্ন বলিয়াই এতকাল সকলের সংস্কার । ছিল। লর্ড ফেলবিন দেখাইয়াছেন, ভূগর্ভ যতই তপ্ত হউক না কেন, উপরের ভূপৃষ্ঠের চাপ এত অধিক যে, অভ্যন্তর ভাগ দ্রব অবস্থায় । নাই। দ্রব অবস্থায় যে নাই, তাহার অন্ত প্রমাণও পাওয়া যায়। সমুদ্রে যেমন চন্দ্র সুৰ্য্যের আকর্ষণ-গুণে জোয়ার ভাটার আন্দোলন । অনবরত হইতেছে, পৃথিবীর অভ্যন্তর দ্রব হইলে সেখানেও সেইরূপ । আন্দোলন সৰ্ব্বদা চলিত। ভূপৃষ্ঠের অধিবাসীর পক্ষে সে ব্যাপারটা । বড় সন্তোষজনক হইত না । সেরূপ আন্দোলন নাই দেখিয়া । ফেলবিন অনুমান করেন ভূগর্ভ অন্ততঃ ইস্পাতের মত কঠিন। পৃথিবীর পৃষ্ঠভাগটা অবশু গৰ্ভভাগের সহিত তুলনায় অত্যন্ত তল হইয়াছে। এককালে গরম ছিল সন্দেহ নাই, এককালে

  • অনেকে ক্ষুদ্র গ্রহগুলির উৎপত্তির অন্য কারণ নির্দেশ করেন। বড় গ্রহ

ভদিয়াশতখণ্ড হইয়াছে ঠিক নহে ; বৃহৎকায় বৃহস্পতির ও শনৈশ্চরের প্রবল | আকর্ষণ প্রভাবে ক্ষুদ্র পায় নাই । si গ্রহগুলি জমাট বাধিয়া একটা বড় গ্রহে পরিণত হইতে :