পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, প্রথম ভাগ).djvu/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নারীর প্রতিষ্ঠা সৌন্দর্য্যে। সেখানে কবিদিগের রচনায় যে সৌন্দ ৰ্য্যের পূজা প্রচারিত হইয়াছে সে সৌন্দৰ্য্য কেবল ইন্দ্রিয়মাত্রের দ্বারা উপভোগ্য নহে। জগতের সমস্ত সৌন্দর্য্যের অন্তরে যে সৌন্দৰ্য্যশক্তি নিহিত আছে নারীসৌন্দর্ষ্যে তাহ সম্যক পরিস্ফুট বলিয়া নারীপূজায় সেই সৌন্দর্য্যেরই পূজা করা হয়। এবং এই সৌন্দৰ্য্য পূজা নারী হইতে ক্রমে সমস্ত প্রকৃতিতে যেন ব্যাপ্ত হইয়। পড়িয়াছে। . আধুনিক কবি এই সৌন্দৰ্য্যশক্তিকে অদৃশু প্রভাবের মত অনুভব করেন। বসন্তের বাতাস যেমন চঞ্চল পক্ষে ফুলে ফুলে নিশ্বাস ফেলিয়া বহিয়া যায়, এই অদৃশু প্রভাবের ছায়াও সেইরূপ সৰ্ব্ববিশ্বের উপর দিয়া-লোক লোকান্তর স্পর্শ করিয়া—প্রবাহিত হয়। এই অদৃশু প্রভাব—এই ছায়—শুধু সঙ্গীতের স্মৃতির মত—অত্যন্ত রহস্যময়, কিন্তু এই রহস্যবশতঃই প্রিয়তর। এই সৌন্দর্য্যের মূলশক্তি বাহ্য প্রকৃতিতে মানবহৃদয়ে প্রেমে আশায় স্বপ্নে সৰ্ব্বত্র ছায়া ফেলিয়াছে। কবি এই চরাচরপ্লাবী সৌন্দৰ্য্যরহস্তে নিমগ্ন হইয়া দেখিতেছেন যে, এই সমস্তই সেই মহাসৌন্দর্য্যে ওতপ্রোত ; এবং এই সৌন্দৰ্য্য অবলম্বন করিয়াই মানবের অন্তরের সহিত প্রকৃতির অন্তরের অনিৰ্ব্বচনীয় যোগস্থত্র নিবন্ধ রহিয়াছে। সৌন্দর্য্যের এই অদ্বৈতবাদই আধুনিক পাশ্চাত্য কবিতার মৰ্ম্মস্থল। ইহাকে অদ্বৈতবাদ না বলিয়া ঐক্যবাদ বলা উচিত। সমস্ত চরাচর চেতন অচেতনের মধ্যে যে একমাত্র মহীয়সী সৌন্দৰ্য্যশক্তি উদ্ভাসিত ইহাতে তাহাই প্রকাশ পাইয়াছে।— -- . এই অতীন্দ্রিয় সৌন্দর্য্যের উপলব্ধি দ্বারা সমস্ত খণ্ড জগৎ একটি সৰ্ব্বব্যাপী সুমধুর মিলনে আবদ্ধ হইয়া একটি অখণ্ড সঙ্গীতের ন্যায় বৃহৎ এবং এক হইয়া উঠিয়াছে। সঙ্গীতের বিচ্ছিন্ন স্থরগুলি স্বতন্ত্র ভাবেও শ্রুতিমনোহর হইতে পারে, কিন্তু যখন তাহাদের মধ্যে আবিষ্কার করা যায় তখন আনন্দ স্বনিবিড় হইয় উঠে এবং একটি বিপুল রহস্যময় পুলকে সমস্ত অন্তরাত্মা চন্দ্রের আকর্ষণে সমুদ্রের f蠶·总 কাব্যে প্রকৃতি | - eరి(t আদ্যাপান্ত একটি অবিভক্ত সৌন্দর্ঘ্য একটি মহা রাগিণীর সমগ্ৰতা । § ন্যায় আন্দোলিত হইতে থাকে। প্রাচীন কাব্যে প্রকৃতি কোথাও । এরূপ সম্মিলিত সমতানে অনাদ্যন্ত নভস্তল হইতে মানবের অন্তর গুহা পৰ্য্যন্ত ধ্বনিত হইয়া উঠে নাই। সেখানে খণ্ড প্রকৃতি-খণ্ড সৌন্দৰ্য্য-মানবের সাহচৰ্য্য করিয়া আসিয়াছে। কিন্তু এক বিশ্বব্যাপিনী মহীয়সী সত্তা মানবাত্মাকে চরাচরের সহিত সৌন্দৰ্য্যপুষ্পমালো আবদ্ধ করিয়া মহীয়ান করে নাই। কেবল আমাদের প্রাচীনতম কাব্যগ্রন্থে বেদে এই মহাসঙ্গীত উদগীত হইয়াছে। তেমন সহজে তেমন সতেজে তেমন । সংক্ষেপে আর কোন দেশের কোন কাব্যে জগতের এই রহস্যবার্তা প্রচারিত হয় নাই। ঋষির বলিয়াছেন— আনন্দাদ্ধোব খন্বিমানি ভূতানি জায়ন্তে । আনন্দেন জাতানি জীবন্তি, আনন্দং প্রয়ন্ত্যভিসংবিশন্তি । - আনন্দ হইতেই সমস্ত প্রাণী জন্মলাভ করিয়াছে, আনন্দের দ্বারাই সমস্ত প্রাণী জীবিত রহিয়াছে এবং আনন্দের অভিমুখেই প্রবেশ করিতেছে। ভাবিয়া দেখিলে ইহাতে সকল কথাই বলা হইয়াছে। সমস্ত সৌন্দৰ্য্য সমস্ত স্থখ সমস্ত চেতনা সমস্ত প্রাণ এক অনাদি অনন্ত মহানন্দের দ্বারা সন্দীপ্ত হইয়া উঠিয়াছে—সেই জগচ্চরাচরের জগদতীত আনন্দঐক্য যে মহাত্মা অনুভব করিতে পারিয়াছেন তিনি আর ন বিভেতি কুত-চন, * - - - -