পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

 “বড়বধূ ভ্রূভঙ্গী করিয়া বলিলেন, জানি গো জানি! ওকে বলে পেটে ক্ষিধে মুখে লাজ! চল্‌ ভাই সেজবৌ, ওর তো জানবার আবশ্যক নেই, তবে মিছে কেন ব’সে ব’সে হায়রান হওয়া।”

 দেখা যাচ্ছে, এই যুগের লেখার মধ্যে শক্তির পরিচয় মাঝে মাঝে পাওয়া যায় না তা’ নয়, এইরকম কত শক্তি ব্যক্তিগত কুণ্ঠার বা লোক-লজ্জার ভয়ে লোক লোচনের অন্তরালে আত্মগোপন করে ব্যর্থ হ’য়ে গেছে, কে’ তার হিসাব রাখে।

 ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে পাশ্চাত্যশিক্ষার বিস্তার এবং স্ত্রীশিক্ষার প্রতি সমাজের সহানুভূতি বাড়বার সঙ্গে সঙ্গে বহু মহিলা লেখিকা সাহিত্যক্ষেত্রে প্রবেশ করলেন। তাঁদের ধারাবাহিক তালিকা দেবার পূর্বে ঐ শতাব্দীর চারজন সর্বপ্রধানা কবি এবং সর্বশ্রেষ্ঠা উপন্যাসের রচয়িত্রী ও সম্পাদিকার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিতে চাই। তাদের নাম যথাক্রমে শ্রীমতী গিরীন্দ্র মোহিনী দাসী, শ্রীমতী মানকুমারী বসু, শ্রীমতী কামিনী রায় এবং শ্রীমতী স্বর্ণকুমারী দেবী।

 বাংলাদেশে এই ঊনবিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠা তিন জন কবির মধ্যে গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী বয়সের দিক দিয়ে সবার বড়, গিরীন্দ্রমোহিনীর জন্ম ১৮৫৮ সালে। ১৮৬৮ সালে বহুবাজারে এক রক্ষণশীল পরিবারে দশবৎসর বয়সে এঁর বিবাহ হয়। বাল্যকাল থেকে সংস্কৃত পড়ার দিকে, কবিতা লেখার দিকে এবং ছবি আঁকার দিকে তাঁর ঐকান্তিক আকর্ষণ ছিল, উত্তরকালে এই সব দিকেই তিনি শক্তির পরিচয় দিয়েছেন। ‘হিন্দুমহিলার পত্রাবলী’ ‘ভারতকুসুম’ “কবিতাহার”, “অশ্রুকণা”,