হ’য়ে জ্যোতির্ভূষিতা ঊষার সঙ্গে তুমি নিত্য প্রতি-জাগরিতা থেকো।[১] সিন্ধু যেমন দাক্ষিণ্যগুণে নদীদের সাম্রাজ্য পেয়েছে, তুমিও তেমনি আপন মহত্ত্ব ও দাক্ষিণ্যগুণে পতিগৃহে সম্রাজ্ঞীর পদ লাভ কোরো।[২] নারীর এই “সম্রাজ্ঞী-রূপ” সেদিন কেবল গৃহমধ্যে আবদ্ধ ছিল না, ঘরে বাইরে পুরুষকেও মহত্ত্বে বীরত্বে প্রেরণা দিয়ে ভারতের পুরুষকে জগতের শীর্ষস্থানীয় করে তুলেছিল। ঋষিপত্নীরা শুধু বেদরচনা এবং অধ্যাপনাই করতেন না, প্রয়োজন হলে রথারূঢ়া হ'য়ে সৈন্য পরিচালনা করে “সহস্র-জয়িনী” হতেন। শত্রুর অস্ত্রে বীর নারীর পা উড়ে গেলে, দেবতারা তাঁকে লোহার পা গড়িয়ে দিয়েছিলেন। উপনয়ন, ব্রহ্মচর্য পালন প্রভৃতি সকল নারীর জন্য সেদিন বিহিত ছিল, তবু যাঁর যেদিকে সামর্থ্য ছিল তাঁর কোথাও কোনো বিষয়ে বাধা ছিল না। ভালোমন্দের মিশ্রণে বৈদিকযুগের চরিত্রগুলির সঙ্গে আধুনিক ভারতের নারী-চরিত্রের খুব বেশী অমিল নেই। সপত্নীবিদ্বেষিণী কদ্রূ, স্বামীপরিত্যাগিনী সূর্যপত্নী সরণ্যুর মতো মেয়েও সেযুগে একান্ত দুর্লভ ছিল না।
বেদের পরে স্মৃতির যুগে এবং রামায়ণ-মহাভারতের যুগে আমরা যেসব নারী-চরিত্রের পরিচয় পাই, তার মধ্যে সীতা, সাবিত্রী, দময়ন্তী, শৈব্যা, চিন্তা, বিদুলা, দ্রৌপদী, কুন্তী, গান্ধারী প্রমুখ রাজকন্যা রাজবধূদের এবং সুলভা, মৈত্রেয়ী, গার্গী,