পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬০
সাহিত্যে নারী: স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

দেবতা বৈমাত্রেয় ভাই হোডারকে হত্যা করে বল্ডারের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিলে। বলা বাহুল্য ভারতীয়, এমনকি,—গ্রীক পুরাণের পাশেও এই সব বর্বর জাতির কাহিনী নিতান্তই বালসুলভ বলে মনে হয়।

 এর অনেক পরের যুগে আরব পারস্যের কবি-কল্পনায় ধরাপড়া একটি নারীরত্নের কথা এই সঙ্গেই আমরা উল্লেখ করছি।

 ভারতের বাইরে যে কয়েকটি কল্পিত নারীচরিত্র পৃথিবীর সকল দেশের মানব মানবীর আপন জন রূপে অভ্যর্থিত হয়েছে, তার মধ্যে বহু অভিজ্ঞ পণ্ডিতের মতে বিশ্ব সাহিত্যে আরব সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ দান “আলফ লয় লহবা” বা একাধিক সহস্র রজনী। ‘আরব্য উপন্যাসে’র ‘শাহার জাদী’ চরিত্র সাহিত্যিক শ্রেষ্ঠ নারীদের অন্যতম। পারস্যরাজ শাহরিয়র নিজের প্রিয়তমা পত্নীর দুশ্চরিত্রতায় সমস্ত নারীজাতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে প্রতি রাত্রে একটি সুন্দরীকে বিয়ে করতেন এবং সকাল বেলা তার প্রাণদণ্ডের আদেশ দিতেন। সমগ্র নারীজাতিকে এইভাবে হত্যা করে তিনি রাজ্যের ব্যাভিচার দূর করার দুশ্চেষ্টায় নিরত ছিলেন, কিন্তু বুদ্ধিমতী মন্ত্রিকন্যা শাহার জাদী তাঁর এই মহদুদ্দেশ্যে বাধা প্রদান করলেন। তিনি স্বেচ্ছায় রাজাকে বিবাহ করলেন এবং তাঁর ভগ্নী ‘দীনার জাদী'কে লক্ষ্য করে এক হাজার এক রাত্রি ধরে কত বিচিত্র কাহিনীর রস রচনা দিয়ে নারীঘাতী রাজাকে নারী-মহত্ত্বে মুগ্ধ করলেন, ও শেষ পর্যন্ত তাঁর অসাধারণ বুদ্ধিকৌশলে রাজার মধ্যের দুর্দ্ধর্ষ প্রতিহিংস্র বুদ্ধি পরাভূত হয়ে তাঁর কাছে নতি স্বীকার করল।

 প্রাচীন পারস্যের লেখিকাদের সম্বন্ধে আমরা বেশী কিছু