পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪০
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

দু’টির সঙ্গে যেন কর্ণবিদারী রোমাঞ্চকারী “বল হরি হরিবোল” ধ্বনি কাণে ভেসে ওঠে; প্রথমটির একাংশ;—

“আবার সে উচ্চরোল ঘন ঘন হরিবোল,
প্রাণময়ী প্রমদারে কোথা নিয়ে যায়,
দিব না দিব না নিতে, দিব না সমাধি দিতে,
কাড়িয়া সে পাগলিনী কোলে নিতে চায়।”

ইত্যাদি চোখে জল না এনে পারে না। পত্নী সারদার চিতাশয্যার পাশে দাঁড়ান কবির মর্মকথাগুলিও এই রকমই মর্মন্তুদ;—

“কি দেখিতে আসিয়াছ ওহে শশধর!
তোমার অধিক শোভা, ততোধিক মনোলোভা,
শোয়ায়ে দিয়েছি আজ চিতার উপর।”

কন্যা মণিকুন্তলার উল্লেখ করে;—

“মা-মরা দুঃখিনী মেয়ে বড় যন্ত্রণার
মা-মরা দুঃখিনী মেয়ে, এ-ঘরে ও-ঘরে যেয়ে,
দেখে ইতি উতি কোথা জননী তাহার
সারদার শেষচিহ্ন “মণিই” আমার।”

 এইসব শোকাশ্রুপূর্ণ কবিতার পর এর ঠিক উল্টাসুরে “কুসুমের বনে পাওয়া কুসুমকে’’ নিয়ে যে কাব্য, তা’তে বিস্মিত বা সস্মিত হ’বার কোন কারণই নেই, সাহিত্যিক বা বাস্তব নারীর তার সঙ্গে কোন গৌরবের সংযোগ নেই। তাঁর শেষবীণার তারের ঝঙ্কারে আমরা শোকসঙ্গীতের রেষই আবার শুন্‌তে পাই, কিন্তু সে ব্যক্তিগত শোকের কান্নাহাটি বিলাপমর্মর ছাপিয়ে সেই অগ্নি-কষা বাঙ্গালীর বুকের মাঝখানে সপাৎ করে ঘা দিয়েছিল;−