পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২৪
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

 প্রত্যাবর্ত্তনের চঞ্চলা হিমানী মেয়েটী এবং নির্মাল্যর দু’একটী যুঁই চামেলী সিউলির মতনই ছোট্টর মধ্যে সুরভি ভরা মেয়ে দেখা গেছে।

 আমোদিনী ঘোষজায়ার “ডায়েরীর দৌত্য” “চিত্রাঙ্গদা” প্রভৃতিতে যে-সব নারীচরিত্র পাই, অনেকেই বর্তমানের পরিচিতা নব্যভাবাপন্না, নারী না বলে তাঁদের মহিলা বলাই সঙ্গত।

 শৈলবালা ঘোষজায়ার “সেখ আন্দু’, “মিষ্টি সরবৎ”, “ইমানদার”, “আড়াইচাল”, “নমিতা”, “মঙ্গলমঠ” প্রভৃতিতে পুরুষচরিত্রের বৈশিষ্ট্য দেখি, নারীচরিত্র অসম্পূর্ণ, বহুস্থলে অসংযত এবং অসঙ্গতি দোষদুষ্ট। “বিপত্তি” এবং “নমিতা”য় নারীকে এ দেশের মেয়ে বলে বেশ চেনা যায়।

 শান্তা এবং সীতা দেবীর সম্মিলিত উপন্যাস, “উদ্যানলতা” সাহিত্যে নূতনচরিত্রের আমদানী করে, লেখিকারা সে দিনের পাঠকসমাজের চিত্তকে চমকে দিয়েছিলেন। নায়িকা চপলা চঞ্চলা মেয়ে “মুক্তি”কে আমরা নিজেদের ছোটবেলায় যেন নিজেদের মধ্যেই দেখেছি, এমনই পরিচিতা লেগেছিল তাকে। পরে পরে অনেক গল্প ও উপন্যাস তাঁরা লিখেছেন, আধুনিক স্কুল কলেজের মেয়েদের জীবনযাত্রা প্রণালীর প্রত্যেকটি খুঁটিনাটি নিয়ে ছবিগুলি অতি সুন্দররূপে ফুটে উঠেছে, যদিও নারী-চরিত্র মধ্যে কতকটা একঘেয়েমী এসে গিয়েছে। অন্যান্য নারী-চরিত্র কয়েকটী অতি সুন্দর এবং তাদের মধ্যে বৈচিত্রেরও কোন অভাব হয় নি। ত্যাগপূত পূণ্য চরিত্রের সঙ্গেও আমরা পরিচিত হতে পেরেছি অতি সাধারণদের আশে পাশে।