পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যের লক্ষণ ఏసె নিজ চিত্তবৃত্তিকে অভিন্ন করিয়া তুলিবার যোগ্যতা প্রাপ্ত হইয়াছেন, তাহারাই সহৃদয় । কবির মনোমুকুরে কাব্যবস্তুর যে বিম্ব উৎপত্তিলাভ করিয়াছে, সহৃদয় পাঠকের বিশদ চিত্তাদর্শে যখন তাহারই নিখুত প্রতিবিম্ব প্রতিফলিত হইবে, কবির চিত্তবীণায় যে মূল রাগিণী ঝঙ্কত হইতেছে, সহৃদয়ের হৃদয়তন্ত্রীও যখন তাহারই স্বরে অমুরণিত হইয়া উঠিবে, তখনই কবিকর্ম সার্থক। সেই জন্যই আচার্য অভিনবগুপ্ত তাহার লোচন-ব্যাখ্যার উপোদঘাতে মঙ্গলাচরণ শ্লোকে বলিয়াছেন— সরস্বত্যাস্তত্ত্বং কবিসহৃদয়াখ্যং বিজয়তে । কবির ভাষায়— তটের বুকে লাগে জলের ঢেউ তবে সে কলতান উঠে । বাতাসে বনসভা শিহরি কাপে তবে সে মর্মর ফুটে । ‘সাহিত্যের এই শেষোক্ত ব্যুৎপত্তি স্বীকার করিয়া লইলে কেবলমাত্র শব্দাত্মক কবি-স্মৃষ্টিই যে সাহিত্যের গণ্ডির মধ্যে পরিগণিত হইবে, তাহা নহে, যদিও লৌকিক ব্যবহারে ভাষানিবদ্ধ গদ্য-পদ্যাত্মক স্বষ্টিকেই মুখ্যত ‘সাহিত্য”—এই সংজ্ঞার দ্বারা নির্দেশ করা হইয়া থাকে । “সাহিত্যে’র পরিসর আরও ব্যাপক। ভাষাই কেবলমাত্র ভালুকের অন্তর্গঢ় চিত্তবৃত্তির প্রকার, পরচিত্তের সহিত কবিচিত্তের সংযোগ বা সাহিত্য স্থাপনের একমাত্র মাধ্যম নহে। চিত্র, সঙ্গীত, ভাস্কর্য প্রভৃতি ললিতকলাও কবি-মনের প্রকাশের বিভিন্ন ভঙ্গি । কালিদাস বা শেক্সপীয়র যেখানে নিজ নিজ অকুভূতি প্রকাশ করিবার জন্য শব্দকেই উপাদানরূপে নির্বাচন করিয়াছেন, রাফেল, মাইকেল এঞ্জলো, হাগনার প্রভৃতি কলাবিদগণ সেখানে যথাক্রমে বণিক, মর্মর ও রাগিণীকে স্ব স্ব অনুভূতি প্রকাশের উপাদানরূপে গ্রহণ করিয়াছেন। উদ্দেশ্য