পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য ও রসতত্ত্ব 8 ዓ প্রতীতির উদ্ভব হইয়া থাকে। নটকে দুষ্যস্ত’ বলিয়া এই যে জ্ঞান, ইহা 'অম্বুমান নহে, ইহা সাক্ষাৎকার বা পারসেপশন। কিন্তু ইহ লৌকিক সাক্ষাংকার নহে, ইহা অলৌকিক (ট্রানসেনডেন্টাল ) । ইন্দ্রিয়ের সহিত বিষয়ের সন্নিকৰ্ষ বা সংযোগবশে যে জ্ঞান উৎপন্ন হইয়া থাকে, তাহাকেই সাক্ষাৎকার বা প্রত্যক্ষজ্ঞান ( পারসেপশন, ইমিডিয়েট নলেজ) বলা হয়। এই প্রত্যক্ষের আবার দুইটি বিভাগ—লৌকিক এবং অলৌকিক। লৌকিক প্রত্যক্ষ সেইখানেই সম্ভবপর, যেখানে জ্ঞায়মান বিষয়টি ( অবজেক্ট অব নলেজ ) বস্তুত জ্ঞানকালে বর্তমান এবং যাহার সহিত চক্ষু: প্রভৃতি জ্ঞানেন্দ্রিয়ের প্রকৃত সম্বন্ধ স্থাপিত হইয়াছে। যখন আমাদের চক্ষুরিন্দ্রিয়ের সাহায্যে ঘটজ্ঞান হয়, তখন আমাদের ঘটের লৌকিক প্রত্যক্ষ হইয়া থাকে—কেন না, ঘটটি সত্যসত্যই বর্তমান এবং তাহার সহিত চক্ষুরিন্দ্রিয়ের সংযোগ সত্যসত্যই স্থাপিত হইয়াছে। কিন্তু যেখানে শুক্তিকায় রজতবুদ্ধি জন্মে, সেখানে বুজতের চক্ষুষ প্রত্যক্ষ হয়—ইহা স্বীকার করিতেই হইবে । কিন্তু উহা অলৌকিক । কেন-না, সত্যসত্যই রজতথও সেখানে বর্তমান নাই, এবং ফলে উহার সহিত চক্ষুরিন্দ্রিয়ের সংযোগাদি সম্বন্ধ স্থাপিত হইতে পারে না। সুতরাং উহ। অলৌকিক । এখানে নটে যে দুৰ্যন্তবুদ্ধি এবং 'নট যে দুৰ্য্যন্তনিষ্ঠ রতিভাবের আশ্রয় এই বোধ, এই দুইটিই অলৌকিক প্রত্যক্ষ । কেন-না, ঐতিহাসিক দুৰ্য্যন্ত ব্যক্তি অথবা তন্নিষ্ঠ মুখ্য রতিভাব—ইহাদের কোনটিরই অভিনয়ক্ষেত্রে বাস্তব সত্তা নাই । সুতরাং উহাদের সহিত আমাদের জ্ঞানেন্দ্রিয়ের কোনও বাস্তব সম্বন্ধ বা সন্নিকৰ্ষ স্থাপিত হইতে পারে না । অথচ ঐ রূপ সাক্ষাৎকারও সামাজিকগণের অনুভবসিদ্ধ। সুতরাং ইহা স্বীকার না করিয়া উপায় নাই যে, অভিনয়স্থলে সামাজিকগণের নটব্যক্তিতে যে ইনিই দুৰ্যন্ত, ইনিই শকুন্তলাবিষয়ক রতিমান—এইরূপ বোধ জন্মিয়া থাকে, উহা সৰ্বথা আরোপমূলক সাক্ষাৎকার, উহা অলৌকিক প্রত্যক্ষেরই অস্তুভূত। এবং সামাজিকগণের চিত্তে অভিনয়দর্শনজনিত যে আনন্দের উদ্রেক হইয়া থাকে, যাহাকে সাহিত্য