পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/৩৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१४ সুরেশচন্দ্র সমাজপতি ভক্তি শ্রদ্ধায় পরিণত হইয়াছিল। জীবন-প্রভাতে যাহাকে বন্ধু বলিয়া বরণ করিয়াছিলাম, জীবন-মধ্যাহ্নে তিনি আমার অগ্রজের স্থান অধিকার করিয়াছিলেন । জীবন-সন্ধ্যায় তাহাকে হারাইয়াছি । আমার দুর্ভাগ্য আরও শোচনীয়। রামেন্দ্রসুন্দর বাঙ্গাল দেশের কৰ্ম্মক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত নিৰ্জ্জন স্থান বাছিয়া লইয়াছিলেন । তিনি বৈজ্ঞানিক, তিনি দার্শনিক, তিনি সাহিত্যিক । কৰ্ম্মী রামেন্দ্রসুন্দর নীরবে সাহিত্যের ক্ষেত্রে আপনার জীবন সার্থক করিয়া গিয়াছেন । র্তাহার কৰ্ম্মজীবনে অন্যসাধারণ বিশেষত্ব ছিল । কিন্তু তাহার সমগ্র জীবনে যে বিশেষত্ব ছিল, সেই বিশেষত্বের প্রভাবেই তিনি বাঙ্গালীর হৃদয় জয় করিয়াছিলেন । সে বিশেষত্ব—ৰ্তাহার দেশাত্মবোধ । তিনি খাট বাঙ্গালী ছিলেন। তাহার প্রকৃতিগত ভাবের সুবর্ণে কোনও খাদ ছিল না । রামেন্দ্রসুন্দর শৈশবে, কৈশোরে স্বীয় জনকের নিকট এই স্বাদেশিকতার দীক্ষা লাভ করিয়াছিলেন । র্তাহার শিক্ষা ছিল বিদেশী, কিন্তু দীক্ষা ছিল স্বদেশী । বিদেশের জ্ঞানে বিজ্ঞানে আকণ্ঠ মগ্ন হইয়াও রামেন্দ্রসুন্দর কখনও স্বাদেশিকতায় বঞ্চিত হন নাই। ইহাই তাছার জীবনের প্রধান বিশেষত্ব । আমার মনে হয়, রামেন্দ্রসুন্দর ডিরোজিও-যুগের প্রতিক্রিয়ার অবতার। প্রতীচ্য শিক্ষা তাহাকে প্রাচ্য ভাবে, প্রাচ্য সংযমে বঞ্চিত করিতে পারে নাই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জ্বল রত্ন রামেন্দ্রসুন্দর, প্রতীচ্য জ্ঞান ও বিজ্ঞানের সিদ্ধ সাধক রামেন্দ্রসুন্দর আছেলে বিলাতী’ হইবার প্রলোভন সংবরণ করিয়া সে কালের বাঙ্গালার সাবেক চণ্ডীমগুপের খাট বাঙ্গালী থাকিবার সৌভাগ্য লাভ করিয়াছিলেন । যে শিক্ষায় বাঙ্গালা ও বাঙ্গালী রূপান্তরিত হইয়া অদ্ভুত ও উদ্ভটের উদাহরণ