পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (অষ্টম ভাগ).pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন। ১৩০৮ ] বাঙলা কৃৎ ও তদ্ধিত । N\)S প্ৰত্যয়ের উদাহরণগুলির মধ্যে মাটিয়া ( মেটে ), বালিয়া ( বেলে ), দাড়িয়া ( দেড়ে ) প্ৰভৃতি শব্দগুলিকে কেন ধরিয়াছেন বুঝা গেল না । তিনি পরে একটি বিশিষ্টাৰ্থ ইস্ + আ প্ৰত্যয় নির্দেশ করিয়াছেন, তাহার উদাহরণ স্বরূপ জঙ্গলিয়া ( জঙ্গুলো), গোবরিয়া ( গুবরে ), ইত্যাদি শব্দের উল্লেখ করিয়াছেন, আমাদের বিবেচনায় মাটিয়া বলিয়া প্রভৃতিকে সেই শ্রেণীতে ফেলিলে ভাল হইত । ৫ । রবীন্দ্ৰ বাৰু আন ও আন + অ নামে দুইটি প্রত্যয় নির্দেশ করিয়াছেন এবং উভয়ের মধ্যে পার্থক্য রাখিবার নিমিন্ত উচ্চারণ অনুসারে কতকগুলি শব্দের প্রচলিত বানান ত্যাগ করিয়াছেন, যেমন, -বানান, উঠান ; উনান, উজান, চালান, মাচান ইত্যাদি—এগুলি লিখিবার সময় এ পৰ্য্যন্ত কাহাকে ও হস্ চিহ্ন ব্যবহার করিতে দেখি নাই । উচ্চারণ অনুসারে যদি এ সকল শব্দে প্ৰথা বিরুদ্ধ হস্ চিহ্ন ব্যবহারে প্রত্যয়ান্তর কল্পনা করিতে হয়, তবে তাহার “অন” প্ৰত্যয় নিম্পন্ন “মাতন, চলন, ধরণ, কঁাদন, গড়ন” ইত্যাদি শব্দের প্রত্যয়টিকে উচ্চারণ অনুসারে “অন” না বলিয়া অন্য বলিতে হয় এবং শব্দ গুলি ও হসন্ত করিয়া লিখিতে হয় । ৬। রবীন্দ্ৰ বাবু অনুজ্ঞার ‘ও’ প্ৰত্যয় করিয়া ধাতু এক মাত্ৰিক কি না তাহা স্থির করিবার এক সহজ সঙ্কেত বাহির করিয়াছেন ; কিন্তু তাহা সকল স্থলে ঘটে না । তঁহার যুক্তি—আমরা যেমন “দেখো”। বলি, তেমন “তাকে।” বলি না তাকা ও বলি ; অতএব তাক ধাতু নদে “তাকা” ধাতু এবং ইহা বহুমাত্ৰিক, কিন্তু অনুজ্ঞার ও প্ৰত্যয় করিলে একমাত্ৰিক ধাতু কাল ভেদে অন্যরূপ হয়। যেমন দেখ, দেখো ও দেখি ও । ৭। রবীন্দ্র বাবু “অন+অ)” নামে যে প্রতীয়টি নির্দেশ করিয়াছেন এবং তাহার উদাহরণ স্থলে তিনি যে শব্দ গুলির উল্লেখ করিয়াছেন, তাহার একটিতেও উক্ত প্ৰত্যয়টার বর্তমানতা দেখিতে পাইলাম না,-দেন, পাওনা ফে লনা, মাগন, শুকনা, খেলনা, বাটনা, বাজনা, চাকনা ইত্যাদি,-ই হার কোনটাতেই “আনা” প্ৰতায় নাই । “পাওনা” শব্দে যদি প্ৰত্যয়ের আদিস্থিত আকারের উচ্চারণ “ও” হইয়া গিয়াছে ধরা যায় তবেই রক্ষা হয়। আমার বিবেচনায় রবীন্দ্র বাবু যদি এই শব্দগুলিকে ”অনা” প্ৰত্যয়ের উদাহরণ স্বরূপ না ধরিয়া “ফাৎনা, জাবনা, পাখনা৷” প্ৰভৃতি শব্দের সহিত উচ্চারণগত সাদৃশ্য ধরিয়া “না” প্ৰত্যয়ের শ্রেণীতে ফেলিতেন তাহা হইলে চলিতে পারিত। “বিছানা।” শব্দের কলিকাতায় উচ্চারণ “বিছন।” বা “বেছ না” আর “পাওনা” শব্দের পূর্ববঙ্গের উচ্চারণ “পা-না” । যাহা হউক এই শ্রেণীর অন্য সকল গুলিকে “না” প্ৰত্যয়ের মধ্যে ধরিয়া “বিছানা” ও “পাওনা” শব্দ সাধিবার জন্য কিছু বিশেষ নিয়ম করিলেই চলিতে পারে। বাজনা, খেলনা প্ৰভৃতি শব্দের বাজনা, খেলনা প্ৰভৃতি রূপই লিখনে ব্যবহৃত হয় বটে, সুতরাং "অনা” প্ৰত্যয়ের অস্তিত্ব নাই এ কথা না বলিলেও চলে। তবে আমাদের নাকি কলিকাতার উচ্চারণ ধরিয়াই কাজ করিতে হইবে । শুকনা শব্দ লিখনে ব্যবহৃত হয়, কখনে