í ؛ به مدیر * রাখিলে চলে না। আরও একটু মনোযোগ দিয়া দেখিলে দেখা যায় যে, “আল” প্ৰত্যয়ান্ত শব্দগুলি অর্থগত বিশেষণ হইলেও বিশেষ্যাবৎ ব্যবহৃত হইতে পারে, কিন্তু “আলো|” প্ৰত্যয়ান্ত পদগুলি নিরবচ্ছিন্ন বিশেষণই হইয়া থাকে। এরূপ স্থলে প্ৰত্যয় দুটার রূপ একটু পৃথক রাখিলে বোধ হয় ভালই হয়। e ঈ-রবীন্দ্র বাবু কোথাও ঈকারের অস্তিত্ব রাখেন নাই, কিন্তু ঈ প্রত্যয়টি অন্যান্য ভাষাতেও আছে। ভারতবর্ষের ভাষাগুলিতে এবং আরবী পারসী ভাষাতেও এষ্ট ঈ প্ৰত্যয় ঈ দ্বারাই লিখিত হয়। রবীন্দ্ৰবাবু যে সকল অর্থে ঈ প্ৰতায়ের উল্লেখ করিয়াছেন, তদ্ব্যতীত নিম্নলিখিত অর্থেও ঈ প্ৰত্যয় হয়,- সম্বন্ধ অর্থে-সরকারী, পোষাকী, জমীদারী, তালুকদারী, ইজারাদারী, পত্তনীদারী, গতিদারী, হাওলাদারী, আয়মাদারী ইত্যাদি । “জমী দারী” শব্দে, জমীদার সম্বন্ধীয়, ভূসম্পত্তি ও জমীদারের, এই ত্ৰিবিধ অর্থ প্ৰকাশ পায় । ভাবার্থে-নবাবী, আমারী, বাদশাহী, উকীলী, পণ্ডিতী, মাষ্টারী ইত্যাদি । এই সকল শব্দে তৎপদ বা তৎকার্য্য ও বুঝায়। নবাবী, আমারী, বাদসাহী প্ৰভৃতি পারসীতে আছে, কিন্তু ইনস্পেক্টরী, ডাক্তারী, মাষ্টারী, প্রভৃতি কথাগুলি ইংরাজীতে নাই । ইংরাজী শবদ গুলি বাঙ্গালী ভাষায় প্ৰবেশ করিয়া এই রূপে বাঙ্গালা পরিচ্ছদ পরিতে বাধ্য হইয়া পড়িয়াছে। ওকালতীি শব্দের ঈ প্রত্যয়টা বাঙ্গালা, বাকীটুকু খাটী পারসী, কিন্তু তাহার অনুকরণে বাঙ্গালীরা। “জজ” এই ইংরাজী শব্দটি হইতে “জজিয়ন্তী” বলিয়া একটি নুতন শব্দ গড়িয়া ফেলিয়াছে। দেশবাচক শব্দের উত্তর ঈ প্রত্যয় বিকল্পে ইয়া হয়, ভাগলপুরী-ভাগলপুরিয়া, বেনারস-বেনারসিয়া ইত্যাদি । হিন্দীতে এরূপ প্ৰয়োগ অসন্ত্রমসূচক । - বিশিষ্টার্থে-ঈ প্ৰত্যয়ান্ত পদের মধ্যে রেশমী, সুতী, পশমী, সুদী প্ৰভৃতি শব্দ অনেক আছে । “তেজীমনদী” কথাটি কথিত ভাষায় “তেজীবনদী” হইয়া পড়িয়াছে । চাকুরী ও উপজীবিকা বুঝাইতে ঈ প্রতায়ান্ত মুন্সেফৗ, ব্যারিষ্টারী, ম্যাজিষ্ট্রেট, প্ৰভৃতি শব্দের সহিত ঢাকী, ঢুলী, দোকানী, পসারী, কাগজী, দপ্তর প্রভৃতিকে স্থান দিতে হয় । উড়ে-সাপুড়ে, ফঁসুড়ে, ঘোসুড়ে, গেছুড়ে । “ঘোসুড়ে” শব্দ “ঘেসেড়া”ও হয়। লিখিত ভাষায় এই প্ৰত্যয়ের পদান্ত একার বিকল্পে ইয়া হইয়া যায়,-সাপুড়িয়া । এ-রবীন্দ্রবাবু “এ” বলিয়া কোন প্ৰত্যয় ধরেন নাই । তিনি এ-প্ৰেত্যয়ন্ত অধিকাংশ শব্দকে ই + আ প্ৰত্যয়ের মধ্যে পুরিয়াছেন । দেশবাচক শব্দের উত্তর তদুৎপন্ন বা তাঁদেশ সম্বন্ধীয় অর্থে এ প্ৰত্যয় হয়-সািহুরে, উত্তরে, পশ্চিমে, দক্ষিণে, বৰ্দ্ধমেনে, ভাগলপুরে, কাঁটুকে, শান্তিপুরে, ঘাটালে, চীনে ইত্যাদি। হিন্দী ভাষায় “ইয়া” হয়-ভাগলপুরিয়া, শান্তিপুরিয়া ; তদনুসারে বাঙ্গালা ভাষাতেও এই অর্থে লেখকের ইচ্ছানুসারে লিখিত ভাষায় ঐ রূপ রূপও দেখা যায়। •
