পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (অষ্টম ভাগ ১-৪ পর্ব).pdf/৩০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

३७28 সাহিত্য-পরিষৎ পত্রিকা । [ 8शे ९श् ১৩ । রবীন্দ্ৰবাবু অনাস্থার সঙ্গে একটা প্ৰত্যয়ের উল্লেখ করিয়াছেন, তাহার রূপ অনদ-যথা বাসন্দা । ইহা স্থানভেদে এনন্দ (বাসেন্দা), ই নদী (বাসিন্দা), উনদে (বাসুন্দে ) হয় । কেহ কেহ স্পেনীয় verandah শব্দজ বাঙ্গালা বারাণ্ডা বা বারেন্দা শব্দকে এই অনদা বা এনন্দ প্ৰত্যয় যোগে উৎপন্ন বলিতে চাহেন ; কেহ বা বলেন বার ( বাহির )+এনন্দা ( স্থানার্থে) = বারেন্দা ; অর্থ গৃহের বহিঃস্থান। রবীন্দ্ৰবাবুর যে সকল প্ৰত্যয় সম্বন্ধে আমার কিছু কিছু বক্তব্য ছিল, তাহা বলিলাম । তিনি তাহার প্রবন্ধশেষে যে বলিয়াছেন -“নিঃসন্দেহই অনেকগুলি বাদ পড়িয়াছে ; সেগুলি পুরণের জন্য পাঠকদের অপেক্ষায় রহিলাম।”—এক্ষণে র্তাহার সেই আহবানমতে কতকগুলি প্ৰত্যয়ের উদাহরণ দিতেছি । অনাই-রবীন্দ্ৰ বাবু লম্বাই, চৌড়াই প্ৰভৃতি শব্দে কেবলমাত্ৰ “ই” প্ৰত্যয়ের অস্তিত্ব স্বীকার করিয়াছেন, আর ক্রিয়াবাচক-বাছাই, যাচাই, দলাইমলাঙ্গ, খোদাই, ঢালাই ইত্যাদি শব্দে, পদার্থবাচক—মরাই, বালাই, মিঠাই ইত্যাদি শব্দে, নামবাচক-কানাই, বলাই, নিতাই ইত্যাদি শব্দে এবং ধৰ্ম্মবাচক—বড়াই, বামনাই, পোষ্টাই ইত্যাদি শব্দে আ +ই প্ৰত্যয়ের অস্তিত্ব স্বীকার করিয়াছেন । আমার মতে সবগুলিই "আই” প্ৰত্যয় হইলেই ভাল হয় । দেশবাচক শব্দের উত্তর “আই” প্ৰত্যয় করিলে, “তদেশোৎপন্ন” এইরূপ অর্থও প্ৰকাশ করে, যথা-ঢাকাই, আগারাই, খাগড়াই ; (, রবীন্দ্র বাবুও পাটনাই ও বসরাই শব্দের উল্লেখ করিয়াছেন)। সম্বন্ধ অর্থেও আই প্ৰত্যয় হয়, যথা— চোরাই, (চুরি সম্বন্ধীয়), মোগলাই, বাদশাই । আনি-রবীন্দ্ৰবাবু, আন+ই প্ৰত্যয়ের মধ্যে এই প্ৰত্যয়টিকে ধরিয়া গিয়াছেন । এ বিষয়ে সূক্ষ্ম বিচার আবশ্যক । আমার বোধ হয়, তলানি, রসানি, লাগানি, নাসান (ভারতচন্দ্র ) প্ৰভৃতি শব্দে আন+ই অপেক্ষা “আনি”র উপযোগিতা অধিক । পারসী আমদানি রপ্তানি ( আমদ ও রপ্ত হইতে ) এই প্ৰত্যয় যোগে উৎপন্ন । আল-রবীন্দ্ৰবাবু তাহার “ল” প্ৰত্যয়ের উদাহরণের মধ্যে “মাতাল” শব্দটি ও ধরিয়া গিয়াছেন, কিন্তু আমার বোধ হয় “আল” বলিয়া আর একটি প্ৰত্যয় কল্পনা করা যাইতে পারে ; কারণ মাতাল, দাতাল, ভয়াল, ছাবাল, ছিনাল, কোটাল, বাঙ্গাল, প্ৰভৃতি অনেক९gलि अंक *ों&। शांश् । আলী-মিতালী, চতুরালী, ঠাকুরালী, নাগরালী প্ৰভৃতি । আলো-তেজালো, ঝাজালো, ধারালো, শাসিালে, সারালো, মাথালো, গোছালো, জাকালো, রাগালো, গোলালো ইত্যাদি। লেখকের ইচ্ছানুসারে এই শব্দগুলির অন্ত্যবর্ণে বিকল্পে ওকার যোগ করা হয় । যাহার ওকার না দিয়া আকার দিয়া থাকেন, তাহারা উচ্চারণ করিবার সময় সেই অকারকে ওকারাবৎ উচ্চারণ করেন। এরূপ স্থলে উভয় প্ৰত্যায়ের আরুতিগত পার্থক্য থাকে না, অথচ অর্থগত এবং উচ্চারণগত পার্থক্য না।