পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (তৃতীয় ভাগ).pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳՀ সাহিত্য-পরিষদ-পত্ৰিক । [ বৈশাখ। র্যাহার সাহায্যে তিনি সেই সুদূর দেশে-সেই অপরিচিত স্থানে অর্থাভাবজনিত দুঃসহ কষ্ট দূর করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন, যিনি করুণাপরবশ হইয়া তাহাকে অৰ্দ্ধাশন বা অনশন হইতে রক্ষা করিয়াছিলেন, সেই প্ৰাতঃস্মরণীয় মহাপুরুষের প্রতি র্তাহার হৃদয় ভক্তি ও শ্রদ্ধায় অবনতি হইয়াছে। তিনি কৃতজ্ঞ তার উচ্ছাসে বিভোর হইয়া, সেই মহাপুরুষের উদ্দেশে লিখিয়াছেন :-

বিদ্যার সাগর তুমি বিখ্যাত ভারতে। ;

করুণার সিন্ধু তুমি, সেই জানে মনে, দীন যে, দীনের বন্ধু।” ফলতঃ ইয়ুরোপে প্ৰবাসকালে মধুসুদন যেন সৰ্ব্বাংশে জাতীয় ভাবে সঞ্জীবিত হইয়াছিলেন। তিনি পরধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করিয়াছিলেন, কিন্তু শ্ৰীপঞ্চমী, দেবদোল, আশ্বিন মাসে বাঙ্গালীর মহোৎসবের কথা তাহার হৃদয়কে যেন অমৃত্যুরসে অভিষিক্ত করিত। পরদেশে বাস করিলেও তিনি স্বদেশের বিষয়বৰ্ণনায় আমোদিত হইতেন । পরকীয় ভাষা পরকীয় সাহিত্যের অনুশীলন করিলেও তিনি বঙ্গভাষাকে লক্ষ্য করিয়া অনুতপ্তহৃদয়ে গাইতেন“হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন ;- তা সবে, ( অবোধ আমি ) অবহেলা করি, পরিধান লোভে মত্ত, করিনু ভ্ৰমণ পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি।” ইয়ুরোপে মধুসুদন এইরূপ অনুতপ্তহৃদয়ে স্বদেশের জন্য, স্বদেশীয় বিষয়ের নিমিত্ত অনুক্ষণ শোকা শ্ৰী বিসৰ্জন করিতেন। স্বদেশে তাহার শান্তিলাভ হয় নাই। তিনি স্বদেশে থাকিতে নৈরাশ্যে অধীর হইয়া গাইয়াছিলেন : - “আশার ছলনে ভুলি কি ফল লভিানু হায় ! তাই ভাবি মনে ? জীবনপ্রবাহ বহি কালসিন্ধু পানে যায়, ফিরাব কেমনে ? नि ग्नि एञाघूक्षैौन, रौनव् नि निতবু এ আশার নেশা ছুটিল না। একি দায় !” বিদেশেও তঁহার অদৃষ্টে এইরূপ অশান্তি, এইরূপ নৈরাশ্য ঘটিয়াছিল। বিশ্বসংসার যেন তঁহার সমক্ষে মহামরুভূমির মত ছিল। মরুভূমধ্যে তৃষ্ণাকাতর পান্থ যেমন মরীচিকায় উদভ্ৰান্ত হইয়া ঘূরিয়া বেড়ায়, তিনিও সেইরূপ শান্তির আশায় উদভ্ৰান্তভাবে সংসারমরুতে বিচরণ করিতেন। কিন্তু তঁহার আকাঙ্ক্ষা পুৰ্ণ হয় নাই। যে সকল গুণ প্ৰকৃত মনুষ্যত্ব লাভের সহায়, তাহার হৃদয়ে সেই সকল গুণের অভাব ছিল না। শিক্ষা, সংসৰ্গ ও পরিণামদৰ্শিতা অনুকুল হইলে ঐ সকল গুণ সৰ্ব্বাংশে পরিস্ফাট হইয়া ভঁাহাকে সকল বিষয়ে সাধারণের বরণীয় করিয়া